দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরের চিত্র। — নিজস্ব চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। বেশ কয়েক জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, আহতদের মধ্যে কয়েকটি শিশুও থাকতে পারে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাজি কারখানাটি অবৈধ ভাবে চলছিল।
জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ দত্তপুকুরের বাজি কারখানাটিতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, আশপাশের বাড়িগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে বাজি কারখানাটি চলছিল।
বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে কারখানাটি চলছিল। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছতেই স্থানীয়রা তাঁদের কাছে ক্ষোভপ্রকাশ করতে থাকেন। ঘিরে ধরে চলতে থাকে স্লোগান।
বিস্ফোরণের পর চলছে উদ্ধারকাজ। দত্তপুকুরে রবিবার। — নিজস্ব চিত্র
গত ১৬ মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৯ জনের। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পাঁচ দিনের মাথায়, ২১ মে রবিবার কলকাতার অদূরে বজবজের একটি বাড়িতে বাজি বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। পর পর দু’জায়গায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, সেই ঘটনার সাড়ে তিন মাস কাটতে না কাটতেই আবারও বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল বাংলা। এ বারও কাঠগড়ায় সেই বেআইনি বাজি কারখানা। এর ফলে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠছে।
এগরা ও বজবজে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই বেআইনি বাজি উদ্ধারে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়। সে সময় উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরেও পুলিশি অভিযানে মেলে অন্তত ২০০ কুইন্টাল বাজি। অভিযোগ, ওই বিপুল পরিমাণ বেআইনি ভাবে বাড়িতে মজুত করে রাখা হয়েছিল।
দত্তপুকুর থানার নীলগঞ্জ ফাঁড়ির নীলগঞ্জ ইছাপুর পঞ্চায়েত এলাকায় সে সময় পুলিশের তল্লাশি অভিযান চলে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সূত্র মারফত খবর মেলে, কাঠুরিয়া এলাকায় ইবাদত মণ্ডল নামে এক জনের বাড়িতে প্রচুর বাজি মজুত রয়েছে। সেই খবর পাওয়ামাত্রই বারাসতের এসডিপিওর নেতৃত্বে ইবাদতের বাড়িতে তল্লাশি চালায় দত্তপুকুর থানার পুলিশ। সেখান থেকেই উদ্ধার হয়েছিল বেআইনি বাজি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন আরও সচেতন হলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দলের যোগসাজশে এই সব কারখানা চলে। একাধিক জায়গায় বিস্ফোরক মজুত রাখা হয়েছিল।’’ স্থানীয় এক ব্যক্তি সামসুলের বাড়িতে ইট-পাটকেল ছোড়ে উন্মত্ত জনতা। তাঁর বিরুদ্ধেই মূল অভিযোগ।