শঙ্কা বাড়াচ্ছে বিদ্যাধরীর ভাঙন। নিজস্ব চিত্র
ইয়াসের তাণ্ডবের ছবি তাজা। আসছে বর্ষাও। চিন্তার ভাঁজ গভীর হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার বিদ্যাধরী নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের কপালে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জেরে বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল হাড়োয়া, দেগঙ্গার বিস্তীর্ণ এলাকা। বর্ষার আগে তাই বাঁধ মজবুতের জন্য জোরালো দাবি তুলছেন দেগঙ্গার চাঁপাতলা এলাকার বাসিন্দারা। ওই এলাকার বাসিন্দা সন্তোষ বিশ্বাসের কথায়, ‘‘মাটি দিয়ে বাঁধ বাঁধা হয়েছিল কয়েকবার। এ ছাড়া আরও কোনও কাজ হয়নি। বাঁধ নির্মাণের টাকা এলেও তা লুঠ হয়ে যায়। আমরা যাতে বাঁচি তার ব্যবস্থা করুন।’’ একই সুরে ওই এলাকার বাসিন্দা সরোজকুমার বিজলী বলছেন, ‘‘ভাঙনের কবলে পড়েছি আমরা। মাটি দিয়ে বাঁধ বাঁধানো হয়েছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। বাস্তুভিটে চলে গিয়েছে। এখন চাষের জমিতে বাস করছি। আমাদের কোথাও যাওয়ার নেই। মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, আপনি কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করে আমাদের বাঁচান।’’ চাঁপাতলার প্রবীণ বাসিন্দা কমল মণ্ডলেরও আবেদন, ‘‘৩০০ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। কেউ ২ বার, কেউ ৩ বার ভিটে বদল করেছেন। আমরা বাস্তুহারা হয়েছি। আবার চাষের ফসলও গিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে। আমাদের বাঁচান।’’
আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গত ৬ বছর ধরে নদী ভাঙছে। পঞ্চায়েতের তরফে বহুবার জানিয়েছি সেচ দফতরে। কিন্তু আজ অবধি নদীবাঁধের সংস্কার হয়নি। তবে নদীবাঁধের টাকা রাজ্য সরকার টেন্ডার দেয়। সাধারণ মানুষ পঞ্চায়েত প্রধান এবং সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন বটে। কিন্তু পঞ্চায়েত নদী বাঁধ তৈরি করতে পারে না। গ্রামের বাসিন্দারা এটা বোঝেন না। তাই ভুল অভিযোগ করেছেন। ওঁরা যে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ করছেন তা ঠিক নয়।’’
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী এ বিষয়ে বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ থাকলে তা হলে জেলাশাসকের দফতরে সেই অভিযোগ করতে হবে। তার পর সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’