চলছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
গরম রসগোল্লা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে ভরে দিলেন দোকানি। আর তা বাড়ি নিয়ে চলে গেলেন এক যুবক।এক খাবারের দোকানে রুটির সঙ্গে গরম তরকারি প্লাস্টিকের ব্যাগেই দিচ্ছেন দোকানিরা।
বনগাঁ শহরের মিষ্টির দোকান, মুদি দোকানে এবং খাবারের দোকান হোটেল রেস্তোঁরায় এখনও প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার হয়।
পুরসভা থেকে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাজারগুলিতে নিয়মিত পুরসভার তরফে অভিযান চালানো হচ্ছে। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিয়ে কেউ ধরা পড়লে জরিমানাও করা হচ্ছে। প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে নিয়মিত প্রচারও চালানো হচ্ছে। এত কিছুর পরেও মানুষ এখনও সচেতন হননি।
ট বাজার, নিউ মার্কেট, কালীবাড়ি বাজার, নেতাজি মার্কেট, রেলবাজার, চাঁপাবেড়িয়া বাজারে বিক্রেতারা প্রকাশ্যে কেউ প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন না বটে, তবে গোপনে কম পরিমাণে হলেও ব্যবহার চলছে। এক মাছ বিক্রেতা বললেন, ‘‘প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের বদলে আমরা যে ব্যাগ ব্যবহার করছি, তা একটির দাম ১ টাকা। ব্যাগগুলি পাতলাও। ক্রেতাদের কম করে দু’টো করে ব্যাগ দিতে হচ্ছে। ক্রেতারা ব্যাগের জন্য বাড়তি দামও দিতে চান না। ফলে লাভ কমছে। বাধ্য হয়ে মাঝে মধ্যে গোপনে প্লাস্টিকের ব্যাগ দিতে হচ্ছে।’’
বাজারগুলিতে প্লাস্টিক প্রকাশ্যে বন্ধ হলেও কিছু মিষ্টি ও মুদির দোকানে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে প্রকাশ্যেই মালপত্র দেওয়া হচ্ছে। মুদির দোকানে সর্ষের তেল, চিনি-হলুদও প্লাস্টিকের ব্যাগে দেওয়া হচ্ছে।
পরিবেশ কর্মীরা মনে করছেন, সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে প্লাস্টিকের ব্যবহার একশো শতাংশ বন্ধ করা সম্ভব নয়।
শহরের একটি চায়ের দোকানে বসে সন্ধ্যায় প্লাস্টিকের কাপে গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে খোশ মেজাজে গল্প করছিলেন দুই প্রৌঢ়। তাঁরা জানান, বহু দিন ধরেই তো এই কাপে খেয়ে আসছি। শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর, তা জানেনই না।
প্লাস্টিকের কাপে গরম চা খেলে কী হতে পারে?
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব মেডিসিন এর গবেষকেরা জানিয়েছেন, চায়ের প্লাস্টিকের কাপ থেকে মুখে ও লিভারে ক্যানসার ছড়াচ্ছে। তাঁদের মতে, এই ধরনের কাপ তৈরি হয় মূলত মাইক্রোপ্লাস্টিক দিয়ে। এতে থাকা টক্সিক পদার্থ ক্যানসারের অন্যতম কারণ।
বনগাঁ পুরসভার সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিমাসে নিয়ম করে অভিযান চালানো হচ্ছে। যত রকম ভাবে প্রচার করা সম্ভব, তা-ও চলছে। পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। ধরপাকড়ও চলছে।’’