canning

মারধর করছে অসুস্থ ছেলে, প্রশাসনের দ্বারস্থ দম্পতি

এ সব করে আদৌ সমস্যা মিটবে কিনা, তা অবশ্য জানেন না দম্পতি। রণজিৎ বলেন, “কেউ যদি ওর একটু চিকিৎসার ব্যবস্থা করত, তা হলে সুস্থ হয়ে যেত। কত জায়গায় তো ঘুরলাম, কিছুই সুরাহা হল না।” 

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা 

ক্যানিং শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৯
Share:

অসহায়: রাজ দম্পতি

পঞ্চায়েত অফিস, থানা, মহকুমাশাসকের দফতর— সর্বত্র ঘুরছেন বয়স্ক দম্পতি। একটাই আর্জি, “ছেলেকে একটু আটকে রাখুন, ওর চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। না হলে ওর অত্যাচারে আমরা মারা যাব।’’

Advertisement

ক্যানিংয়ের মাতলা ২ পঞ্চায়েতের থুমকাঠি গ্রামের বাসিন্দা রণজিৎ রাজ ও প্রমিলা রাজ। আশি ছোঁয়া রণজিৎ লাঠি নিয়ে চলাফেরা করেন। স্ত্রীর বয়সও সত্তর পেরিয়েছে। দম্পতির দুই ছেলে। বড় ছেলে সীতা হরিনাম করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। কখনও বাড়ি আসেন, কখনও আসেন না। ছোট ছেলে কৌশিক মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে নিয়েই সমস্যা বাবা-মায়ের।

মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে নানা ভাবে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। কার্যত পথে পথে ঘুরছেন দম্পতি। বাড়িতে ঢুকলেই ছেলে লাঠিসোঁটা নিয়ে বাবা-মাকে মারতে তেড়ে আসছেন। কী ভাবে সমস্যার হাত থেকে পরিত্রাণ পাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না রণজিৎরা।

Advertisement

বছর কুড়ি আগে ছোট ছেলের বিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। বিয়ের পরে সব কিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু বছর ছ’য়েকের মাথায় স্ত্রীর সঙ্গে গোলমালের জেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কৌশিক। প্রাণে বাঁচলেও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন কৌশিক। বিগত দশ বছরের বেশি সময় ধরে ছোট ছেলেকে বিভিন্ন মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছেন মা। চিকিৎসকের পরামর্শে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিলেন কৌশিক। কিন্তু গত কয়েক মাসে বেড়েছে সমস্যা। এই পরিস্থিতিতে একদিকে ছেলের সঠিক চিকিৎসা করাতে না পেরে দুশ্চিন্তার বৃদ্ধ দম্পতি। অন্য দিকে ছেলের অত্যাচারে কার্যত বাড়িছাড়া হয়ে থাকতে হচ্ছে।

সোমবার নিজেদের সমস্যা জানাতে ক্যানিং থানায় এসেছিলেন তাঁরা। পুলিশ তাঁদের জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন একজন রোগীকে থানায় আটকে রাখা সম্ভব নয়। ছেলের চিকিৎসার জন্য ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসকের দফতরে যোগাযোগ করতে বলা হয় থানা থেকে। সেখানে পৌঁছন রণজিৎরা। মহকুমাশাসকের সাথে দেখা না হলেও অন্যান্য আধিকারিকেরা ঘটনার কথা শুনে এ বিষয়ে মহকুমাশাসকের কাছে একটি আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন।

এ সব করে আদৌ সমস্যা মিটবে কিনা, তা অবশ্য জানেন না দম্পতি। রণজিৎ বলেন, “কেউ যদি ওর একটু চিকিৎসার ব্যবস্থা করত, তা হলে সুস্থ হয়ে যেত। কত জায়গায় তো ঘুরলাম, কিছুই সুরাহা হল না।”
এ বিষয়ে ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক বন্দনা পোখরিয়াল বলেন, ‘‘এ ধরনের আবেদনপত্র জমা পড়লে নিশ্চয়ই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement