ঠেকানো গেল না সিঁদুর খেলাও। দেগঙ্গায় ছবিটি তুলেছেন সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, মণ্ডপে দর্শনার্থীরা ঢুকতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞা ছিল অঞ্জলি এবং সিঁদুর খেলাতেও। নির্দেশ মেনে মণ্ডপ ফাঁকা থাকলেও তার বাইরে এবং হোটেল-রেস্তরাঁয় বেলাগাম ভিড় হল। বেশির ভাগ জায়গায় অঞ্জলিও দেওয়া হল। হল সিঁদুর খেলাও।
এ বারের ভিড় অবশ্য অন্যান্যবারের তুলনায় অনেকটাই কম। কিন্তু এই করোনাকালে সেই ভিড়ে ক্ষতি কতটা হল আগামি দিনে তা জানা যাবে। পুলিশ বলছে, ট্রেন না চলায় ভিড়ে কিছুটা লাগাম দেওয়া গিয়েছে। তবে এ বারে মোটরবাইকের সংখ্যা ছিল অন্য বারের তুলনায় অনেক বেশি। বেশ কয়েকটি জায়গায় পুলিশ বেশ কিছু বাইক আটকও করেছে।
ষষ্ঠী-সপ্তমীতে আবহাওয়া বিরূপ ছিল। অষ্টমী ও নবমীর রাতে বনগাঁ শহরে ভালোই ভিড় হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে অষ্টমীর দিন রাতে ১০-১৫ হাজার মানুষ শহরের রাস্তা এবং মণ্ডপের বাইরে ভিড় করেছিলেন। নবমীর রাতে একটা সময় শহরের রাস্তায় মানুষ ছিলেন ৩০-৩৫ হাজার। অন্যান্য বছরে নবমীতে শহরে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নানা অভিযোগে ২০০ বাইক আটক করা হয়েছে। এ বার অবশ্য শহরে বড় বাজেটের পুজো ছিল হাতে গোনা। ভিড় না হওয়ার এটাও একটা কারণ। তবে শহরের রেস্তরাঁগুলিতে তিল পরিমাণ জায়গা ছিল না। অনেক মণ্ডপের বাইরে উদ্যোক্তাদের মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বিলি করতে দেখা গিয়েছে।
বসিরহাটে নবমীর রাতে কিছুটা ভিড় দেখা গিয়েছে। কয়েকটি পুজো মণ্ডপে ভিড় উপচে পড়েছিল। বেশির ভাগ দর্শকদের অবশ্য বাইকে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। ভ্যান-রিকশা-টোটোর ভিড়ও ছিল। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে প্রায় ৫০০ জন টাকির একটি মণ্ডপে অষ্টমীর অঞ্জলি দেন। বসিরহাট, টাকিতে পুজোর সময় কয়েক লক্ষ মানুষের ভিড় হয়। তবে এ বারে ট্রেন না চলায় দর্শনার্থীদের ভিড় অনেকটাই কম ছিল। বেশ কিছু পুজো কমিটি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে দর্শকদের মাস্ক- হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বিলি করেছে।
ক্যানিং-বাসন্তী-গোসাবার কোথাও হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যত মানা হয়নি। মণ্ডপের বাইরে ‘নো-এন্ট্রি’ বোর্ডও চোখে পড়েনি। করা হয়নি ব্যারিকেডও। ষষ্ঠীতে এই এলাকাগুলির বড় পুজো মণ্ডপগুলিতে দর্শকের ঢল নেমেছিল। তাঁরা অবাধে মণ্ডপের মধ্যে ঢুকেছেন। দেদার নিজস্বীও তুলেছেন। তবে মণ্ডপে প্রবেশের ক্ষেত্রে মাস্ক বাধ্যতামূলক ছিল। কয়েকটি মণ্ডপের বাইরেই স্যানিটাইজিং যন্ত্রও বসানো হয়েছিল। তবে মাস্ক ছাড়া কাউকে রাস্তায় দেখলে তাঁদের ফেরত পাঠিয়েছে পুলিশ।
ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকায় বেশির ভাগ মণ্ডপ পুজোর চার দিন কার্যত ফাঁকাই ছিল। কিছু মানুষ সাইকেল ও বাইকে করে পুজো মণ্ডপে ঘুরেছেন। দর্শনার্থীদের কোথাও মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বিলি করা হয়েছে। কোথাও আবার বসানো হয়েছিল স্যানটাইজ়িং টানেল। ভাঙড়ের বিভিন্ন মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় না হলেও দশমীতে সিঁদুর খেলায় ভাল ভিড় হয়েছিল।