প্রতীকী ছবি
উড়ো খবরের ভিত্তিতে দিনভর কাজ বন্ধ রেখে ডায়মন্ড হারবার আদালতে অচলাবস্থা তৈরি করলেন আইনজীবীরা। ফৌজদারি ও দেওয়ানি— দুই আদালতের আইনজীবীরাই কর্মবিরতিতে সামিল হন। সোমবার দুপুরে ডায়মন্ড হারবারে রোডে মিছিলও বের করেন তাঁরা।
বুধবার পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনও প্রস্তাব হয়নি।’’ কর্মবিরতির প্রসঙ্গে তিনি কিছু জানেন না।
আইনজীবীদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ডায়মন্ড হারবার মহকুমা মধ্যে রয়েছে ডায়মন্ড হারবার, ফলতা, রামনগর, উস্তি, মগরাহাট, মন্দিরবাজার, কুলপি, মথুরাপুর ও রায়দিঘি— এই ৯টি থানা। আইনজীবীরা কোনও সূত্রে জানতে পেরেছেন, মন্দিরবাজার, কুলপি, মথুরাপুর ও রায়দিঘি— এই চারটি থানা ভেঙে চলে যাচ্ছে কাকদ্বীপ আদালতের অধীনে। ফলে মক্কেলের সংখ্যা কমতে পারে। এই আশঙ্কাতেই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত। আইনজীবিরা।
আইনজীবীদের যৌথ কমিটির পক্ষে সুদীপ চক্রবর্তী, দেবাংশু পন্ডারা জানান, এখানে প্রায় ৭০০ আইনজীবী, হাজার জন মুহুরি রয়েছেন। মক্কেলের সংখ্যা কমে গেলে সকলেরই লোকসান হবে। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। বুধবার পর্যন্ত কর্মবিরতি পালনের পরেও প্রশাসন যদি যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে বলেও জানিয়ে রেখেছেন তাঁরা। কিন্তু থানার সংখ্যা যে কমছে, তা নিয়ে সরকার কি কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে? এমন কোনও নোটিস কি আপনারা পেয়েছেন? সুদীপ বলেন, ‘‘তা পাইনি। কিন্তু বিষয়টি আমরা শুনেছি।’’
স্রেফ শোনা কথার ভিত্তিতে আইনজীবীদের কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে হতবাক বিচারপ্রার্থীরা। ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা বলেন, ‘‘আইনজীবীদের ডেকেছিলাম। জেলা প্রশাসন পর্যন্ত খোঁজ নিয়েছি। থানা ভাগ হওয়ার কোনও খবর পাইনি। সরকারি এ ধরনের কোনও নির্দেশ আসেনি। আইনজীবীদের তা বলেছি। ওঁরা আশঙ্কা থেকেই এমন আন্দোলন করছেন বলে মনে হয়।’’ এই পরিস্থিতিতে বিচারপ্রার্থীরা যে ভোগান্তিতে পড়েছেন, তা মেনে নিয়েছেন মহকুমাশাসক।
রায়দিঘি থেকে এসেছিলেন এক বৃদ্ধা। জানালেন, প্রতিবেশীর সঙ্গে জমি-সংক্রান্ত মামলা চলছে কয়েক বছর ধরে। এমনিতেই মীমাংসা হচ্ছে না। এ দিন এসে দেখলাম, কোনও কাজই হবে না। বৃদ্ধার আক্ষেপ, ‘‘এত দূর থেকে গাড়ি ভাড়া খরচ করে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে।’’