100 days work

বিকল্প কাজের খোঁজে জোর দক্ষিণে

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সব জেলাশাসককে নিয়ে বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বৈঠকে বিকল্প কাজের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সমরেশ মণ্ডল

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৪১
Share:

জিবিডিএ-র আওতায় কপিলমুনির মন্দিরের সামনে সাফাই করে মিলছে মজুরি। নিজস্ব চিত্র

বেশ কয়েক মাস হয়ে গেল, একশো দিনের কাজে কার্যত কোনও বরাদ্দ হচ্ছে না। বকেয়া বহু টাকা। এ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দায় ঠেলাঠেলি চলছে।

Advertisement

এ দিকে, সামনে পঞ্চায়েত ভোট। একশো দিনের কাজ মুখ থুবড়ে পড়লে ইভিএমে তার বিরূপ প্রতিক্রয়া পড়তে পারে বলে বলে মনে করেন শাসক দলের অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত দলের প্রথম সারির নেতারাও।

এই পরিস্থিতিতে একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের যাতে বিকল্প কাজ দেওয়া যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সব জেলাশাসককে নিয়ে বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বৈঠকে বিকল্প কাজের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ইতিমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন একশো দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত বেশিরভাগ শ্রমিককে জেলার বিভিন্ন দফতরের কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছে। বিশেষ করে পূর্ত দফতরের রাস্তার কাজ ও সেচ দফতরের নদীবাঁধ ও অন্যান্য কাজে শ্রমিক বেশি প্রয়োজন হয়। সেখানে বেশি বেশি কাজের সুযোগ তৈরির চেষ্টা চলছে।

জেলার পাঁচটি মহকুমা, ২৯টি ব্লক, ৭টি পুরসভা ও ৩১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। এই সমস্ত এলাকায় নদীবাঁধের কাজ, নতুন ইটের রাস্তা, রাস্তা মেরামত ছাড়াও অন্যান্য কাজের সঙ্গে জবকার্ডধারীদের যুক্ত করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি বছরের পয়লা জুলাই থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮টি দফতরের ৩৬১০টি কাজে প্রায় ৩১ লক্ষ শ্রমিককে নিযুক্ত করা গিয়েছে। কর্মদিবস তৈরি হয়েছে ৮১ লক্ষ। শ্রমিকদের মজুরি বাবদ এই জেলা খরচ করেছে প্রায় ১৮৩ কোটি টাকা। তাতে মাথা-পিছু গড়ে ২২৫ টাকা মজুরি দেওয়া হয়েছে।

সাগর ব্লকের গঙ্গাসাগর গ্রামের বাসিন্দা মল্লিকা মাঝি জানান, আগে গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েত এলাকায় একশো দিনের কাজ করতেন। একশো দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের অফিসের অধীনে সাফাই অভিযানে কাজ করছেন। তাতে সংসার চলে যাচ্ছে।

তবে সকলেই যে বিকল্প কাজ পেয়েছেন এমন নয়। কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর ব্লকের দক্ষিণ হারাধনপুর গ্রামের বাসিন্দা হারাধন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার জব কার্ড ছিল। মাঝে মধ্যে ধসপাড়া সুমতিনগর ২ পঞ্চায়েত এলাকায় একশো দিনের কাজ করে টাকা পেয়েছি। তা দিয়েই সংসার চলত। এখন প্রায় এক বছর হল, পঞ্চায়েতে কাজ নেই। বাধ্য হয়ে গ্রামের রাস্তায় সাইকেলে করে মাছ ফেরি করি।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা জানান, একশো দিনের কাজে যে সমস্ত শ্রমিক যুক্ত ছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগকে পঞ্চায়েত, জিবিডিএ, বন, সেচ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পূর্ত দফতরের কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যাঁরা একশো দিনের কাজ পাচ্ছেন না, তাঁদের যতটা সম্ভব অন্য দফতরের কাজের সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ এসেছে। আমরা সেই মতো কাজ শুরু করেছি। আরও গতি বাড়াতে হবে। জেলার বিভিন্ন দফতর কমবেশি কাজ দেওয়া শুরু করেছে।’’

পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো জবকার্ডধারীদের বিকল্প কাজ দেওয়া চালু হয়েছে। সেটা যাতে আরও গতি পায়, সে জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন।’’ মন্ত্রী জানান, একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে তা হয়নি। প্রদীপের কথায়, ‘‘আমরা প্রস্তুত আছি। যখনই সুযোগ মিলবে, আমরা নিশ্চয়ই যাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement