Basirhat

দিদির দূতের সফর যেন বিজয় মিছিল, সমস্যার কথাই বলা হল না, কটাক্ষ

সোমবার সন্দেশখালির গ্রামে ‘দিদির দূত’ অবশ্য সেই কর্মসূচির নামে রীতিমতো জাঁকজমক করে মিছিল করলেন। মালা পরিয়ে, শঙ্খ-উলুধ্বনি দিয়ে মহিলারা স্বাগত জানাতে ভিড় করলেন।

Advertisement

নির্মল বসু 

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৫
Share:

নেতাদের ফুল-মালা পরিয়ে অভ্যর্থনা জানালেন গ্রামবাসীরা, সন্দেশখালির গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

কথা ছিল, আড়ম্বরহীন হবে কর্মসূচি। কথা ছিল, গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিশে অভাব-অভিযোগের কথা শুনবেন জনপ্রতিনিধিরা। কথা ছিল, দিদির দূতেরা দিদির প্রতিনিধিত্ব করছেন, সে কথা যেন মনে থাকে।

Advertisement

সোমবার সন্দেশখালির গ্রামে ‘দিদির দূত’ অবশ্য সেই কর্মসূচির নামে রীতিমতো জাঁকজমক করে মিছিল করলেন। মালা পরিয়ে, শঙ্খ-উলুধ্বনি দিয়ে মহিলারা স্বাগত জানাতে ভিড় করলেন। দলে দলে লোক এসে জুটে গিয়ে কার্যত দলের মিছিল হল।

কর্মসূচির মূল লক্ষ্য তাতে ব্যাহত হল না কি? সন্দেশখালি ও বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়কের কাজকর্ম নিয়ে উঠল সেই প্রশ্ন। গ্রামের এক বৃদ্ধ পরে বললেন, ‘‘কত কথাই তো ছিল বলার। কিন্তু বিজয় মিছিলের ধাঁচে এমন জনসংযোগ কর্মসূচির ভিড়ে কোনও কাজের কাজই হল না!’’

Advertisement

সোমবার সকালে সন্দেশখালির গ্রামে গিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার মাহাতো এবং বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। তাঁদের ঘিরে কয়েকশো মানুষ জড়ো হয়ে যান। বেড়মজুর অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় যান নেতারা। কয়েক জনের বাড়িতেও ঢোকেন। কিন্তু লোকলস্কর দেখে কেউই বিশেষ মুখ খোলেননি গ্রামের মানুষ। সামান্য কুশল বিনিময়েই শেষ হয় কর্মসূচি। বিধায়কেরা অবশ্য কয়েক জনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কোনও সমস্যা নেই তো? সকলেই ঘাড় নেড়ে জানিয়েছেন, সব ঠিক আছে।

শাহানুর গাজি, রোকেয়া বিবিরা পরে জানান, বিধায়কেরা গ্রামে এলেন, ভাল কথা। তবে রাস্তাঘাট, পানীয় জলের সমস্যার কথা জানাতে চেয়েও ভিড়ের মধ্যে সে সব কিছু হয়ে উঠল না।

শাহজাহান পরে বলেন, ‘‘এলাকায় যেতে যে ভাবে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন, তাতে আমরা আপ্লুত। এই অভ্যর্থনাই জানিয়ে দেয়, আমরা সমস্ত প্রকল্পের পরিষেবা দিতে পেরেছি। এলাকায় যথেষ্ট উন্নয়ন করতে পেরেছি। আগামী দিনে পাড়ায় পাড়ায় দিদির দূতেরা পৌঁছবেন। সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা নথিবদ্ধ করা হবে।’’

বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি এবং সিপিএম। বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, ‘‘গ্রামের উন্নয়ন হয়েছে কি না তা জানতে মিছিল করে যেতে হয় নাকি! গ্রামের মানুষ দূতেদের প্রত্যাখ্যান করতে পারেন, সেই ভয়ে ওঁরা দলবল নিয়ে গিয়েছিলেন।’’ সন্দেশখালির সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার বলেন, ‘‘দিদির দূতের নাম করে আসলে সাধারণ মানুষকে চমকাতে মিছিল করে গিয়েছেন তৃণমূল নেতারা।’’

তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ বিষয়ে বলেন, ‘‘উন্নয়ন হয়েছে বলেই মানুষ আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন। ভিড় হয়েছে। এতে আমাদের করার কিছু নেই। তবে মনে রাখতে হবে, ভূল করলে ক্ষমা চাইতে হবে। মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের অভাব-অভিযোগ, সমস্যার কথা মন দিয়ে শুনে তা লিপিবদ্ধ করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement