জোরকদমে: চলছে মেরামতি। নিজস্ব চিত্র
কাকদ্বীপের কাশীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলা পড়ান ডায়মন্ড হারবারের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রীতম বেরা। রোজ সকালে ডায়মন্ড হারবার বাস স্ট্যান্ড থেকে বাস ধরে সোজা পৌঁছে যেতেন কাকদ্বীপের স্কুলে। কিন্তু ধসের জন্য রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার সকালে অনেক ঘুরে স্কুলে পৌঁছতে হল তাঁকে। জানালেন, স্টেশন মোড় থেকে ছোট গাড়িতে নেতরা হয়ে হটুগঞ্জ গিয়েছেন। সেখান থেকে আবার গাড়ি ধরে তবে স্কুল। এতে সময় বেশি লাগছে। খরচও বেশি। অন্য দিন যেখানে ১০ টাকায় পৌঁছে যান স্কুলে, এ দিন খরচ পড়েছে প্রায় ৩০ টাকা।
একই সমস্যায় পড়েছেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সফিউল আলম। তিনি কুলপির গাজির মহল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। রাস্তা বন্ধ থাকায় দ্বিগুণ ভাড়া লেগেছে যাতায়াতে। তা ছাড়া, অনেকটা সময় হাতে রেখে বেরোতে হয়েছে বাড়ি থেকে।
ডায়মন্ড হারবার, ফলতা, রামনগর, উস্তি, মগরাহাট থেকে যাঁদের নিয়মিত কাকদ্বীপ বা রায়দিঘি যেতে হয়, রাস্তা বন্ধ থাকায় হয়রান হচ্ছেন তাঁরাও। বিকল্প রাস্তায় ছোট গাড়ি চললেও তা সংখ্যায় কম। গরমের মধ্যে গাড়িতে ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করতে বিরক্ত তাঁরা।
বিপাকে পড়েছেন বাস চালকেরাও। ধর্মতলা থেকে কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা যাতায়াত করা সরকারি ও বেসরকারি বাসগুলি শিরাকোল থেকে উস্তি, হটুগঞ্জ হয়ে গন্তব্যে পৌঁছচ্ছে। কোনও কোনও বাস আবার দোস্তপুর থেকে উস্তি হয়ে যাচ্ছে। ফলে ডায়মন্ড হারবার, সরিষা-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের যাত্রী পাচ্ছে না বাসগুলি। প্রায় খালি গাড়ি নিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাড়ছে লোকসান। এ দিনই ভূতল পরিবহণ দফতরের একটি সরকারি বাসে শিরাকোল থেকে কুলপি পর্যন্ত মেরেকেটে ১০-১২ জন যাত্রী চোখে পড়ল। ওই বাসের কন্ডাক্টর সুশীল দাসের কথায়, ‘‘বাসে ৫০টি আসন রয়েছে। কখনও এমন খালি যায় না। রাস্তায় ধস নামায় ডায়মন্ড হারবার দিয়ে যেতে পারছি না। ফলে যাত্রী পেতে সমস্যা হচ্ছে।’’ গাড়ির চালক বলেন, ‘‘গ্রামের ভিতরের রাস্তাঘাট সরু। বড় গাড়ি নিয়ে যাওয়া বেশে সমস্যার। কোনও গাড়িকে পাশ দিতে গেলে রাস্তার পাশের গাছের ডাল বাসের জানলা গলে যাত্রীদের চোখে-মুখে লাগছে।’’