Dengue infection

ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রত্যেক দিন বাড়ছে বাদুড়িয়ায়

রাজ্যের স্বাস্থ্যভবন থেকে আধিকারিকেরা সম্প্রতি বাদুড়িয়া ও হাসনাবাদ ব্লকে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। হাসনাবাদের ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১৮।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৪৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মধ্যে বাদুড়িয়া ব্লকে ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। আক্রান্তের সংখ্যা এখানে সব থেকে বেশি। এপ্রিল মাস থেকে এখনও পর্যন্ত এই স্বাস্থ্য জেলা জুড়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৯ জন। এর মধ্যে বাদুড়িয়া ব্লকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫৫ জন আক্রান্ত বলে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। যদিও ব্লক প্রশাসনের দাবি, ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪০। বাদুড়িয়া পুরসভার ১, ২, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে গত কয়েক দিনে প্রায় ৩৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। বিরোধীদের দাবি, ব্লক স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গির আসল তথ্য গোপন করছে। ডেঙ্গি নিয়ে বাদুড়িয়া ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর তেমন তৎপর নয় বলে তাঁদের অভিযোগ।

Advertisement

রাজ্যের স্বাস্থ্যভবন থেকে আধিকারিকেরা সম্প্রতি বাদুড়িয়া ও হাসনাবাদ ব্লকে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। হাসনাবাদের ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১৮। বিডিও হাসনাবাদ অলিম্পিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পাটলি খাঁপুর পঞ্চায়েত থেকে কিছুটা বেশি ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয় ব্লক স্বাস্থ্য দফতরকে সঙ্গে নিয়ে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। হাসনাবাদের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শাহিন হাসান বলেন, “গত বারের থেকে এ বার একটু বেশি ডেঙ্গি রোগী মিলেছে ব্লকে। তবে এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”

বাদুড়িয়ায় প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১০ জন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। বাদুড়িয়ার রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রের খবর, হাসপাতালে এখন রোজই প্রায় ১০০ জন করে রোগী আসছেন জ্বর নিয়ে। সব থেকে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে রঘুনাথপুর, বাগজোলা, যদুরহাটি— এই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে। গত বছরও এই পঞ্চায়েতগুলিতে বর্ষাকালে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দেয়। ফের এ বছর পরিস্থিতি একই রকম।

Advertisement

বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাধক সুকল্যাণ বৈদ্য বলেন, “ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর যে সংখ্যা দেখাচ্ছে তা বাস্তবের তুলনায় অনেক কম। চারিদিকে এত ডেঙ্গি রোগী, অথচ স্বাস্থ্য দফতর এবং ব্লক প্রশাসনের তেমন কোনও তৎপরতা চোখে পড়ছে না। রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের পরিকাঠামো বেহাল। আমরা দ্রুত এলাকার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে ডেঙ্গি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আবেদন জানাব।”

সিপিএম নেতা অনিমেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাদুড়িয়া পুরসভা এলাকায় জল নিকাশি ব্যবস্থা বেশ খারাপ। বিভিন্ন এলাকায় জল জমে আছে বর্ষায়, ডেঙ্গির আদর্শ পরিবেশ। ব্লক প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর নামমাত্র একটু সচেতনামূলক প্রচার করে। তা এ বিষয়ে অনেকটাই উদাসীন।”

বাদুড়িয়ার পুরপ্রধান দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “তিনটি ওয়ার্ডে কিছু ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। এখন অনেকটা কমেছে। আমরা সব পদক্ষেপ নিচ্ছি যাতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে থাকে।” বাদুড়িয়ার বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাসের কথায়, “আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি ডেঙ্গি পরিস্থিতি আয়ত্তে রাখতে। উদাসীনতার অভিযোগ ভিত্তিহীন।” ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ওয়াসিম হায়দার মণ্ডল বলেন, “জ্বর হলেই ডেঙ্গি পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রত্যেক দিন প্রায় ১০০ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগী আসছেন। এখন সপ্তাহে প্রায় ১০ জন করে ডেঙ্গি রোগী মিললেও সকলে ভাল আছেন। অনেকে বাড়িতে থেকেই সুস্থ হচ্ছেন। আমরাও যথেষ্ট তৎপর আছি।” বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবিউল ইসলাম জানান, জেলায় এ বার গত বারের তুলনায় কিছু বেশি ডেঙ্গি রোগী পাওয়া গিয়েছে। তবে সকলেই সুস্থ হয়ে উঠছেন। মৃত্যুর খবর নেই। বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হচ্ছে পরিস্থিতি মোকাবিলায়।

সূত্রের খবর, গত বারের তুলনায় এ বার বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায় প্রায় ১২০ জন অতিরিক্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলেছে এখনও পর্যন্ত। বসিরহাট ২ ব্লক থেকেও ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে প্রায়ই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement