দেগঙ্গায় চলছে প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।
সাপে কাটা রোগীকে হাসপাতালের বদলে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেগঙ্গায় কুসংস্কারের বলি হয়েছিলেন দু’জন সর্পদষ্ট যুবক। তাঁদের মৃত্যুর পর যেন হুঁশ ফিরল প্রশাসনের। সংবাদমাধ্যমে ওই ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর সোমবার নড়েচড়ে বসল তারা। সোমবার এলাকায় মাইকের মাধ্যমে সচেতনা প্রচারে নামল দেগঙ্গা ব্লক প্রশাসন।
দেগঙ্গা থানা ও ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সাপে কাটা রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য কী করণীয়, তা নিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের তরফে মাইকের মাধ্যমে প্রচার করা ছাড়াও আশাকর্মীরা এলাকার প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে স্থানীয়দের এ বিষয়ে সচেতন করার কাজ শুরু করেছেন।সাপে কামড়ানোর পর ঝাড়ফুঁকের বদলে রোগীকে সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার পাঁড়ুইপাড়ার সমীর পাঁড়ুইকে সাপে কামড়ায়। তবে বাড়ি থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে সরকারি হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও সমীরকে সেখানে নিয়ে যাননি তাঁর পরিবারের লোকজন। ওঝার বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ ঝাড়ফুঁকের পরে মারা যান সমীর। ওই ঘটনার পর রবিবার ফের সাপের কামড়ে মারা যান দেগঙ্গার কুমরুলি গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম। শনিবার রাতে তাঁকে বিষধর সাপে কামড়ায়। এ ক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। রিয়াজুলকে হাসপাতালের বদলে নিয়ে যাওয়া হয় এক ওঝার বাড়ি। এর পর সমীরের মতো তাঁরও মৃত্যু হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সর্পদষ্ট দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়তেই সচেতনা প্রসারে নামে ব্লক প্রশাসন। বেড়াচাঁপা-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শেখ নৌসাদুউজ্জামান বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই বেদনাদায়ক। তবে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশাকর্মীরা প্রচার করছেন যাতে সাপে কাটা রোগীকে ওঝার কাছে নয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এ বিষয়ে মাইকের মাধ্যমেও এলাকায় প্রচার চলছে।”