ধন্যবাদজ্ঞাপন: থানায় বাবলু-কুন্তল। নিজস্ব চিত্র
মামলা তুলে নাও, তা হলে ফেরত পাবে টাকা।
প্রতারিত দুই যুবকের মনে হয়েছিল, এ-ও বুঝি দুষ্কৃতীদের নতুন কোনও ছক। মামলা তোলেননি তাঁরা। ততক্ষণে ধরাও পড়েছে প্রতারক চক্রের চার জন। শেষমেশ দুই যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গোটা টাকাটাই ফিরিয়ে দিয়েছে প্রতারকেরা।
মোবাইল টাওয়ার বসানোর টোপ দিয়ে প্রতারনা করা হয় বনগাঁ শহরের দুই যুবকের সঙ্গে। প্রথমে বলা হয়েছিল, বাড়িতে মোবাইলের টাওয়ার বসালে মোটা টাকা ভাড়া দেওয়া হবে। এ জন্য শুধু জমি-বাড়ির কাগজপত্র থাকলেই চলবে। সেই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন বাবলু ভাস্কর ও কুন্তল মণ্ডল। কিন্তু ক্রমশ নানা অজুহাতে ধাপে ধাপে তাঁদের কাছ থেকে টাকা হাতাতে শুরু করে প্রতারকেরা। বাবলু প্রায় ১ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা দেন। কুন্তল দিয়েছিলেন ১ লক্ষ ১০ হাজার।
একটা সময়ে দু’জনেই বুঝতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন। পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। তদন্তে নেমে ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চক্রের বাকিদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু হয়।
ধরা পড়ার ভয় পেতে শুরু করে বাকিরা। লোক পাঠিয়ে বাবলু-কুন্তলদের তারা প্রস্তাব দেয়, মামলা তুলে নিলে তারা গোটা টাকাটাই ফেরত দেবে। কথাবার্তা চলতে থাকে দু’তরফে। পুলিশকেও সে কথা জানান ওই দুই যুবক। দিন কয়েক আগে কুন্তলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে। বুধবার টাকা ফেরত পেয়েছেন বাবলুও। পুলিশকে এ জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার বনগাঁ থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজের সঙ্গে দেখা করেছেন তাঁরা। বাবুলু জানান, তিনি সোস্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো প্রচার শুরু করেছেন, আর যাতে কেউ এ ভাবে টাকা না খোয়ান।
বাবলুর কথায়, ‘‘একটা সময়ে মনে হয়েছিল, টাকা হয় তো আর ফিরে পাব না। কিন্তু পুলিশের ধরপাকড়ের জন্য টাকা ফিরে পেলাম।’’ সতীনাথ বলেন, ‘‘আমরা আমাদের কর্তব্য করেছি। চক্রের বাকি সদস্যদেরও গ্রেফতার করা হবে।’’
মামলা তুলে নিচ্ছেন না তা হলে?
‘‘প্রশ্নই উঠছে না। ওদের ধরা পড়া খুব দরকার। না হলে আমাদের মতো আরও কত মানুষ প্রতারিত হবেন’’— বললেন কুন্তল।