এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় শীলার দেহ। নিজস্ব চিত্র
অশান্তির জেরে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন তরুণী। পুজোর পর জোর করে বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে এসেছিল শ্বশুর। রবিবার ওই তরুণীরই দেহ উদ্ধার হয় শ্বশুরবাড়ির থেকে। কুলতলি থানার শ্যামনগর এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম শীলা সর্দার (১৯)। কুলতলির দেউলবাড়ি এলাকায় তার বাপের বাড়ি। শীলার খুন ও দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতেই শ্বশুর শিবরাম সর্দারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর স্বামী সাগর সর্দার, শাশুড়ি সাবিত্রী ও বাড়ির অন্যরা পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে বিয়ে হয় সাগর ও শীলার। মৃতার পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকে নানা কারণে হেনস্থা করা হত শীলাকে। বাপের বাড়ি থেকে টাকা ও অন্য জিনিস আনার জন্য চাপ দেওয়া হত তাঁকে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত। অশান্তির জেরে পুজোর সময় বাপের বাড়িতে চলে আসেন তিনি। শীলার বাবা নিমাই নস্কর মেয়েকে আর শ্বশুরবাড়িতে পাঠাবেন না বলে মনস্থির করেন। সেই সময় শ্বশুর শিবরাম গিয়ে মিটমাট করে শীলাকে আবার ফিরিয়ে আনে। কিছুদিন ঠিক থাকার পর আবার শুরু হয় অশান্তি।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার স্বামী, শ্বশুর ও পরিবারের অন্যরা মিলে শীলাকে মারধর করে খুন করে বলে অভিযোগ। দেহ লোপাটের চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু ওই এলাকাতেই তরুণীর এক আত্মীয়া থাকতেন। তিনি জানতে পেরে শীলার শ্বশুরবাড়ি আসেন। ফলে আর দেহ লুকোতে পারেনি শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কুলতলি থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর পুলিশ এসে দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
শীলার জেঠু মধুসূদন নস্কর বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকে টাকার জন্য মেয়ের ওপর অত্যাচার করত। বাপের বাড়ি থেকে টাকা গয়না নিয়ে আসার জন্য চাপ দিত। পুজোর সময় যখন মেয়ে ফিরে এল, আমরা আর ওই বাড়িতে পাঠাতে চাইনি। শ্বশুর এসে মিটমাট করে নিয়ে গেল। তারপরও ওরা মেয়েটাকে মেরে ফেলল। এদের কঠোর শাস্তি চাই।’’