প্রতীকী ছবি।
মাথায় গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। বুধবার রাতে, বিষ্ণুপুর থানা এলাকার চকনিতাই গ্রামে। মৃতের নাম প্রদীপ বাগ (১৯)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই রাতে মা-বাবার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করে খাটে শুয়ে পড়েন প্রদীপ। মা শচীবালা সেই ঘরেই মাটিতে শুয়েছিলেন। আচমকা বিকট শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে গেলে দেখেন, বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছেন প্রদীপ। কপালের এক পাশ দিয়ে রক্ত ঝরছে। আওয়াজ পেয়ে পাশের ঘর থেকে ছুটে আসেন বাবা সুফল। এর পরে প্রতিবেশীদের সাহায্যে প্রদীপকে আমতলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রদীপের বিছানা থেকে পুরনো একটি পাইপগান উদ্ধার করা হয়েছে। মিলেছে একটি তাজা কার্তুজও। ওই যুবকের বিরুদ্ধে অতীতে অপরাধমূলক কাজকর্মে যুক্ত থাকার অভিযোগ নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ। অধিকাংশ সময়ে বাড়িতেই থাকতেন তিনি।
প্রদীপের বাবা সুফলবাবু পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা শচীবালা আনাজ বিক্রি করেন। প্রদীপের এক দাদা বিশেষ ভাবে সক্ষম। মায়ের সঙ্গে তিনিও আনাজের ব্যবসা করেন। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, আগেও কয়েক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন প্রদীপ। মাস ছয়েক আগে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেও মা-বাবা এসে পড়ায় বেঁচে যান তিনি। মাস দুয়েক আগে নিজের মাথায় কাচের বোতল ভেঙেছিলেন প্রদীপ। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে দিন সাতেক পরে বাড়ি ফেরেন। তার পরেই বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দেন। সারা দিন ব্যস্ত থাকতেন মোবাইল নিয়ে। সুফলবাবু বললেন, ‘‘আমি আর ওর মা বহু বার জিজ্ঞাসা করেছি, কী সমস্যা, আমাদের খুলে বল। কিন্তু আমাদের কিছুই বলত না।’’ প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, প্রেমঘটিত কারণেই সম্ভবত অবসাদগ্রস্ত ছিলেন ওই যুবক। মৃত্যুর কারণ জানতে তাঁর মোবাইল ফোনটি পরীক্ষা করা হচ্ছে।
প্রদীপের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়ে ধন্দে পড়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, ওই ধরনের পাইপগান ৫০-৬০ বছর আগে ব্যবহার করা হত। প্রদীপ কোথা থেকে সেটি জোগাড় করেছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে। পাইপগানটির বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি সুফলবাবুরাও।