বের করে আনা হচ্ছে দেহ। নিজস্ব চিত্র।
বন্ধ ঘর থেকে এক বৃদ্ধ দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে সোমবার চাঞ্চল্য ছড়াল ক্যানিংয়ের দিঘিরপাড় মিলন সঙ্ঘ এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম রঞ্জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (৮৫) ও কবিতা বন্দ্যোপাধ্যায় (৭৬)। দেহ দু’টি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের অনুমান, অন্তত দু’দিন আগে মৃত্যু হয়েছে ওই দম্পতির। কবিতার মাথায় চোটের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের অনুমান, পড়ে গিয়ে আঘাতের কারণে ওই চোট। বৃদ্ধ বিছানাতেই হৃদরোগে মারা যেতে পারেন।
বারুইপুর জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দম্পতির বড় ছেলে চিরঞ্জীব কর্মসূত্রে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে থাকেন। ছোট ছেলে কলকাতা পুলিশে কর্মরত। তিনি কলকাতায় থাকেন। রঞ্জিতবাবু আগে পুরোহিতের কাজ করতেন। এখন বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় বাড়িতেই থাকতেন। বেরোতে পারতেন না। দম্পতি থাকতেন বাড়ির দোতলায়। চিরঞ্জীব প্রতি সপ্তাহে এসে বাবা-মায়ের জন্য যাবতীয় বাজার, রান্না করে দিয়ে যেতেন। ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে গরম করেই খেতেন তাঁর বাবা-মা। এ দিন চিরঞ্জীব এসেই বাড়ির পিছনের দরজা ভেঙে ঢোকেন।
চিরঞ্জীব জানান, গত ১৫ এপ্রিল শেষ কথা হয়েছিল বাবা-মায়ের সঙ্গে। গত দু’দিন ধরে একাধিক বার ফোন করলেও বাবা-মা কেউই ফোন তোলেননি। রবিবার সন্ধ্যায় তিনি ক্যানিংয়ে আসেন। রাতে বাড়ির সামনে এসে বেশ কয়েকবার ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনও সাড়া পাননি। সোমবার সকালে এসেও ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে বাড়ির পিছনের দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন তিনি। ঢুকেই বাবা ও মায়ের মৃতদেহ ঘরের দু’জায়গায় পড়ে থাকতে দেখেন।
চিরঞ্জীব বলেন, “আমি ও ভাই বাইরে থাকি। প্রতি সপ্তাহে বাড়ি এসে মা-বাবার জন্য বাজার করে, রান্না করে দিয়ে যাই। দু’দিন ধরে ফোনে পাচ্ছিলাম না। এর আগেও অনেকবারই ফোনে পাইনি। বয়সের ভারে ফোন ধরতে পারেননি। তাই দুশ্চিন্তা করিনি। আজ দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখি দু’জনের দেহ পড়ে রয়েছে।”