Amphan

ফের বাঁধ ভেঙে জল ঢুকল গ্রামে

সাগর ব্লকের ধসপাড়া সুমতিনগর ২ পঞ্চায়েতে সুমতিনগর ও বঙ্কিমনগর গ্রামের কাছে আগের জোয়ারে প্রায় ৩ কিলোমিটার মুড়িগঙ্গা নদী বাঁধ ভেঙেছিল। তা সারানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। এ বার বিভিন্ন জায়গা মিলিয়ে প্রায় ২০০ মিটার নদী বাঁধ ভেঙে ও উপচে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও, বোটখালি এলাকায় সমুদ্র বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩১
Share:

মৌসুনি পঞ্চায়েতের বালিয়াড়া গ্রাম। ছবি: দিলীপ নস্কর

ষাঁড়াষাঁড়ি কটালে ফের ভাসল লোকালয়। শুক্র ও শনিবার দু’দিন ধরে কাকদ্বীপ মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় কোথাও বাঁধ ভেঙে, কোথাও বাঁধ উপচে এলাকায় নোনা জল ঢুকেছে। তবে জল নেমে গেলেই বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করে দিচ্ছে সেচ দফতর।মাসখানেক আগে ভরা কটাল এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে জলোচ্ছ্বাসের ফলে সাগর ব্লকে একাধিক নদী ও সমুদ্র বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। নোনা জলে ক্ষতি হয়েছিল ঘরবাড়ি, মাছের পুকুর ও হাজার হাজার বিঘা কৃষিজমির। তারপরেই তড়িঘড়ি সেচ দফতর থেকে টেন্ডার ডেকে ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলি মেরামতির কাজ শুরু করে। ক’দিনের মধ্যেই অধিকাংশ বাঁধ তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফের বৃহস্পতিবার থেকে অমাবস্যার ষাঁড়াষাঁড়ির কটাল শুরু হয়। কটালের সময়ে সাধারণত দ্বিতীয়া ও তৃতীয়া দু’দিন ধরে নদী ও সমুদ্রের জল বাড়ে। গত শুক্রবার ও শনিবার সকালে দিনের জোয়ারের সময়ে নদী ও সমুদ্রের জল বেড়ে যাওয়ায় আবার নতুন তৈরি করা বাঁধ ভেঙে, উপচে এলাকায় জল ঢুকে পড়ছে।

Advertisement

সাগর ব্লকের ধসপাড়া সুমতিনগর ২ পঞ্চায়েতে সুমতিনগর ও বঙ্কিমনগর গ্রামের কাছে আগের জোয়ারে প্রায় ৩ কিলোমিটার মুড়িগঙ্গা নদী বাঁধ ভেঙেছিল। তা সারানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। এ বার বিভিন্ন জায়গা মিলিয়ে প্রায় ২০০ মিটার নদী বাঁধ ভেঙে ও উপচে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও, বোটখালি এলাকায় সমুদ্র বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতে প্রায় আড়াই কিলোমিটার বাঁধ ভেঙেছিল। ফের ওই বাঁধের কিছুটা অংশ ধসে জল ঢুকে পড়েছে। ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অরুণ প্রামাণিক বলেন, ‘‘নতুন বাঁধে ধস নেমে জল ঢুকেছে। ভাটা পড়তেই অবশ্য সেচ দফতর থেকে বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে কটালে জল বেশি বাড়লেও আবহাওয়া ভাল থাকায় বাঁধের তেমন ক্ষতি হয়নি।’’ সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘কিছু কিছু বাঁধ ভেঙে, কোথাও উপচে এলাকায় জল ঢুকেছে। জল নেমে গেলেই সেচ দফতর থেকে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করছে।”পাথরপ্রতিমায় জি প্লটের গোবর্ধনপুর গ্রামের কাছে আগের কটালে বটতলা নদী ও সমুদ্র বাঁধ বিভিন্ন জায়গা মিলিয়ে আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার ভেঙেছিল। তা সারানোর কাজ চলছে। এ বারের কটালে নতুন করে বাঁধ না ভাঙলেও জল উপচে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গোবর্ধনপুর গ্রামের বাসিন্দা স্বর্ণজিৎ বাগ বলেন, ‘‘কটালে নদী ও সমুদ্রের জল অনেক বেড়ে যাওয়ায় বাঁধ টপকে এলাকায় নোনা জল ঢুকে পড়েছে। তবে প্রাকৃতিক কোনও দুর্যোগ না থাকায় বড় রকমের ক্ষতি হয়নি।’’

নামখানা ব্লকের মৌসুনি পঞ্চায়েতে সমুদ্র ও মুড়িগঙ্গা নদীবাঁধ আগের কটালে প্রায় ১২০০ মিটার ভেঙেছিল। তা পাকাপাকি ভাবে তৈরি করা হবে বলেই কাজ শুরু হয়নি। এ বার কটালের জোয়ারের জলে মৌসুনি ও বালিয়াড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়ি মাছের পুকুর ও কৃষিজমি জলের তলায়। স্থানীয় বাসিন্দারা স্কুলঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। মৌসুনি এলাকার বাসিন্দা তথা নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শুভেন্দু মান্না বলেন, “কটালের জোয়ারের জল ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে। প্রায় ২৫টি পরিবার বাড়ি ছেড়ে স্কুলে ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। কটালে জলের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় এই বিপত্তি।’’কাকদ্বীপ মহকুমা সেচ দফতরে নির্বাহী বাস্তুকার কল্যাণ দে বলেন, “সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ ও পাথরপ্রতিমা এই চারটি ব্লকের প্রায় ১০ কিলোমিটার নতুন বাঁধ তৈরি ও মেরামতি করা হয়েছে। কটালের জন্য নদী ও সমুদ্রের জলের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় বাঁধ উপচে এলাকায় ঢুকে পড়েছে। তড়িঘড়ি বাঁধগুলি মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। তবে কোথাও বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে এমন খবর আসেনি।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement