বকখালিতে তীরে ফিরছেন মৎস্যজীবীরা। —নিজস্ব চিত্র।
ধেয়ে আসছে দুর্যোগ। সেই সঙ্কেতবার্তা পেয়েই সমুদ্র থেকে তীরে ফিরছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীরা। পাশাপাশি উপকূলের বিপদসঙ্কুল এলাকার বাসিন্দাদেরও ইতিমধ্যে সরাতে শুরু করেছে প্রশাসন। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে সুন্দরবনের দ্বীপাঞ্চল এবং উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সকলকেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়ার পরই দু’দিন ধরে সুন্দরবনের নদী এবং উপকূলবর্তী এলাকায় লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। সতর্ক করা হচ্ছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। মৎস্য দফতরের নির্দেশ পাওয়া মাত্র কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, পাথরপ্রতিমা, ডায়মন্ড হারবার এবং রায়দিঘির ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারগুলি। সমুদ্রে যে সব মৎস্যজীবী নিয়মিত মাছ ধরেন তাঁরা ফিরছেন। তাঁদের সঙ্গে ফোনে বা রেডিয়োর মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেই সঙ্কেত পেয়েই তাঁরা ফিরতে শুরু করেছেন।
শনিবার সকাল থেকেই সাগর ব্লকের ঘোড়ামারা দ্বীপ থেকে প্রায় দু’হাজার বাসিন্দা, নামখানার মৌসুনি দ্বীপ থেকে পাঁচ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। এ ছাড়া গোসাবার কুমিরমারি, সাতজেলিয়া, বালির মতো দ্বীপ থেকেও বহু মানুষকে ‘ফ্লাড সেন্টার’-এ নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। চালু করা হয়েছে সুন্দরবনের ‘ফ্লাড সেন্টার’ এবং ‘কমিউনিটি কিচেন’। পঞ্চায়েতগুলিতেও পর্যাপ্ত শুকনো খাবার এবং পানীয় জল মজুত করে রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, জাতীয় এবং রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দলও মোতায়েন করা হয়েছে উপকূলে।
ইয়াসের ক্ষত মিটতে না-মিটতেই নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সুন্দরবন এবং উপকূলবর্তী এলাকায়। ভারী বৃষ্টির জেরে নদী এবং সমুদ্রে ফের জলস্তর বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। বিপর্যয় আটকাতে তড়িঘড়ি সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে রাখছে জেলা প্রশাসন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘পরিস্থিতির উপর সর্বদা নজর রয়েছে। শনিবার রাতের মধ্যে সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে রাখা হবে।’’