তছনছ: ক্ষতিগ্রস্ত জলযান। নিজস্ব চিত্র
আমপানের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের পর্যটনে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য লঞ্চ, ভুটভুটিগুলি এই আমপানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে দয়াপুর, পাখিরালয়ের হোটেল, রিসোর্টগুলিরও। এই ক্ষত সারিয়ে আবার কবে সুন্দরবনে পর্যটন সঠিক ভাবে শুরু করা যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে চলছে লকডাউন। তার জেরে বন্ধ হয়ে রয়েছে সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসা। এই মরসুমের শুরুতেই এনআরসি নিয়ে দেশ জুড়ে ঝামেলা শুরু হওয়ায় ধাক্কা খেয়েছিল পর্যটন। তারপর মাস ছ’য়েক আগে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ফলে পর্যটন কেন্দ্রগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বহু দিন বন্ধ ছিল মানুষের আনাগোনা। ফলে চলতি মরসুমের প্রথম থেকেই সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায় নানা টালবাহাল চলছে। আর সব থেকে বেশি ক্ষতি হল এই আমপানের প্রভাবে।
পর্যটন ব্যবসায়ী শম্ভুনাথ মান্না বলেন, “মরসুমের শুরু থেকেই আমরা এ বার একের পর এক ধাক্কা খেয়েছি। করোনা সংক্রমণের জেরে গত দু’মাসের বেশি পর্যটক নেই সুন্দরবনে। তার উপরে এই ঝড়ের দাপটে আমাদের লঞ্চ, ভুটভুটি সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলিকে কী ভাবে সারাব, সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।’’
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও ২৪ পরগনা বিভাগীয় বন দফতরের যে সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলি রয়েছে, সেখানে কমবেশি সত্তরটি লঞ্চ ও প্রায় সাড়ে তিনশো ভুটভুটি চলে। আমপানের সময়ে সব জলযানগুলিই নোঙর করা ছিল কোনও না কোনও নদীর পাড়ে। কিন্তু প্রবল জলোচ্ছ্বাস ও ঝোড়ো হাওয়ার ফলে বেশির ভাগ লঞ্চ ও ভুটভুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনও কোনও জলযানের উপরের কাঠামো সম্পূর্ণ উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে ঝড়ে। অনেক ভুটভুটিই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় আগামী মরসুমে আদৌ সুন্দরবনে পর্যটন ব্যবসা শুরু করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। দীপক দাস, নিউটন সরকাররা বলেন, “আমপানের ফলে যা ক্ষতি হয়েছে তা সামলে উঠতে যথেষ্ট সময় লাগবে। জানি না, আগামী মরসুমে সুন্দরবনে পর্যটন ব্যবসা চালু করা সম্ভব হবে কিনা। সরকার এ বিষয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ালে আমরা উপকৃত হব।’’
লঞ্চ, ভুটভুটির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হোটেল, লজগুলিও। সুন্দরবনের দয়াপুরে অবস্থিত সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্পের সিওও উদয়শঙ্কর রায় বলেন, “মাত্র কয়েকমাস আগে বুলবুলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল আমাদের রিসোর্টের। বহু গাছ উপড়ে পড়েছিল। ধীরে ধীরে সামলে উঠতে শুরু করেছিলাম। এই ঘূর্ণিঝড় আবারও ক্ষতি করে দিয়ে গেল। তবে জেলাশাসক নিজে আমাদের খোঁজখবর নিয়েছেন।’’