থই-থই: নন্দকুমার পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর গ্রামের কাছে ছাতুয়া নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত এলাকা। নিজস্ব চিত্র
ভরা পূর্ণিমার কোটালের জোয়ারে রায়দিঘির ছাতুয়া নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল এলাকা। বাঁধ ভাঙা নোনা জল ঘরে জল ঢুকে যাওয়ায় উঁচু রাস্তার উপরে আশ্রয় নিয়েছেন বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আমপানের পরে বাঁধে ধস নেমেছিল। পাকাপাকি ভাবে বাঁধ মেরামত না হওয়ায় আবার গৃহহীন হয়ে পড়তে হল।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের নন্দকুমার পঞ্চায়তে নারায়ণপুর গ্রামের কাছে আমপানের সময়ে ছাতুয়া নদীর বাঁধে প্রায় ৬০ ফুট ধস নেমেছিল। তাতে মাটির বস্তা ফেলে কোনও ভাবে ওই বাঁধ সংস্কার করে সেচ দফতর। দু’দিন আগে থেকে পূর্ণিমার ভরা কোটাল শুরু হতেই আস্তে আস্তে বাঁধ ভাঙতে শুরু করে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আবার কোটালের জোয়ার শুরু হতেই বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ওই এলাকায় নারায়ণপুর, ফিসারির ঘেরি ও কুমড়োপাড়া এলাকায়। নোনা জলে ক্ষতি হয়েছে বিঘের পর বিঘে কৃষি জমি, আনাজের খেত, পুকুর, খাল, বিল ও মাছের ভেড়ির।
স্থানীয় বাসিন্দা নিমাই ঘরামি, সন্ন্যাসী ঘরামিদের অভিযোগ, “ঘরবাড়ি তো শেষ হয়ে গেলই। চাষের জমিতে নোনা জল জমে থাকায় কয়েক বছর চাষবাসও বন্ধ। এলাকায় প্রায় সকলেই কৃষিজীবী। কেউ কেউ দিনমজুরি করেন। এই অবস্থায় আমাদের চরম দুর্দশায় পড়তে হবে।”
নন্দকুমারপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কানাই গিরি বলেন, “পূর্ণিমার দিন থেকে ওই বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছিল। আস্তে আস্তে ভাঙনের গভীরতা বেড়ে যাওয়ায় এবং কোটালের জল বাড়ার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আরও এক দিন জোয়ারের জল ঢুকবে। দিন কয়েক পড়ে ভাটা পড়ে গেলে সেচ দফতর থেকে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করবে। আপাতত গৃহহীনদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
রায়দিঘি সাব ডিভিশনের সেচ দফতরের সহকারী বাস্তুকার অমিয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই বাঁধ মেরামতির বিষয়ে রবিবার প্রশাসনিক বৈঠকে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
অন্য দিকে, কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ ও পাথরপ্রতিমা ব্লকের কয়েকটি নদী বাঁধ থেকে অল্প জল ঢুকলেও তা তড়িঘড়ি সেচ দফতর ও পঞ্চায়েত থেকে সারানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেচ দফতরের কাকদ্বীপ সাব ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র কল্যাণ দে বলেন, “আমপানে এই এলাকায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার নদী ও সমুদ্র বাঁধ ভেঙেছিল। তার মধ্যে পূর্ণিমার কোটালে যাতে জল না ঢোকে, সে জন্য বিপজ্জনক বাঁধগুলি সেচ দফতর ও পঞ্চায়েত মিলে মাটি ফেলে সারানো হয়। কয়েকটি জায়গায় সামান্য সমস্যা হলেও আমরা সফল হয়েছি।”