এখনও বাড়ির এমন দশা গ্রামের অনেকের। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ৬ ও ৭ অগস্ট আমপানে ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে। অনেকে প্রথমবার টাকা না পেয়ে দ্বিতীয়বার আবেদন করেছেন। প্রশাসনের তরফে আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু আবেদন খতিয়ে দেখতে একই গ্রামে কিছু মানুষের বাড়ি প্রশাসনের লোকজন গেলেও, অনেকের বাড়িতেই যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। ফলে অনেকের আশঙ্কা, আবারও হয় তো ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত থেকে যেতে হবে।
রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের বহু মানুষ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এখনও অনেকে ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করছেন। ওই পঞ্চায়েতের দমকল ৩ নম্বর পুরকাইতপাড়ার কিছু বাসিন্দা জানান, গত ৬ ও ৭ অগষ্ট বিডিও অফিসে নতুন করে আবেদন করেন। ৯ অগস্ট একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে নিয়ে বিডিও অফিসের এক কর্মী ওই পাড়ায় তদন্তে আসেন। কিন্তু কয়েকটি বাড়ি ঘুরেই ফিরে যান তাঁরা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, “টাকার অভাবে এখনও অনেকে ঘর বাঁধতে পারিনি। ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও রকমে আছি। ক্ষতিপূরণের জন্য ফের আবেদন করলেও আমাদের বাড়িতে এসে তদন্ত করা হল না। জানি না, এ বারও টাকা পাব কিনা।’’
পাড়ার বাসিন্দা সিপিএম নেতা ইয়াসিন গাজির অভিযোগ, “এলাকার শাসক দলের নেতাদের পরিবারের চার-পাঁচ জন করে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। সরকারি চাকরি করেন, এমন মানুষও ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা তুলেছেন। বারবার আবেদন করার পরেও ব্লক দফতর এখনও ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের নামের তালিকাই প্রকাশ করল না।” মথুরাপুর ২ ব্লকের তৃণমূল নেতা শান্তনু বাপুলি বলেন, “যে সব নেতার ঘরবাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি, অথচ ক্ষতিপূরণের টাকা তুলেছেন, তাঁদের নিয়ে আমরা সভা ডেকেছিলাম। যাঁরা এখনও টাকা ফেরত দেননি, তাঁদের দ্রুত ফেরত দিতে বলেছি। না হলে আমি জেলা নেতৃত্বকে জানাব। এখনও পর্যন্ত অনেকেই টাকা ফেরত দিয়েছেন।”
মথুরাপুর ২ বিডিও রিজওয়ান আহমেদ বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন অনুযায়ী প্রত্যেকটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে যাঁরা আগে টাকা পেয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে যাওয়া হচ্ছে না।”
যদিও সিপিএম নেতা ইয়াসিন গাজির দাবি, ‘‘আমার পরিচিত অন্তত ৪০ জন নতুন করে আবেদন করেছেন। এঁরা সকলে প্রকৃ়ত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ আগের বার টাকা পাননি। খুব কষ্ট করে কোনও মতে মাথা গুঁজে আছেন। এঁদের মধ্যে মাত্র জনা তিনেকের বাড়িতে প্রশাসনের লোকজন তদন্তে গিয়েছেন।’’