দাপট: ঝড়ে উড়ল থানার বোর্ড। ছবি: সুজিত দুয়ারি
সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। হালকা বৃষ্টি ও ঝড় চলছিল। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঝড় ও বৃষ্টির গতি বাড়ল বনগাঁ মহকুমায়। পথঘাট জনশূন্য। বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গিয়েছে। গাছের ডাল ভেঙে পড়ছে। গাছের ডাল ভেঙে গাইঘাটায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে। ডাল ভেঙে পড়ে ক্ষতি হয়েছে ঘরের চাল। রাতে ঝড়ের তাণ্ডব বাড়ে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটা, বনগাঁ ও বাগদার উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমপানের লেজের ঝাপটা এই মহকুমায় পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তিনটি ব্লককেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।’’
বুধবার সকাল থেকেই পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভা, পঞ্চায়েতের তরফে এলাকায় প্রচার করে মানুষকে সর্তক করা হয়। ঘর থেকে না বেরোনোর অনুরোধ করা হয়। পঞ্চায়েত, পুরসভা ও মহকুমাভিত্তিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এ দিন দুপুর থেকে যশোর রোডে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। যশোর রোডের দু’পাশে বহু প্রাচীন গাছ রয়েছে। ডাল ভেঙে পড়ে যাতে দুর্ঘটনা না হয়, সে কারণেই এই পদক্ষেপ। মহকুমায় থাকা বাওর, নদীতে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মানুষকে। বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য সকাল থেকে পুরসভা এলাকায় ঘুরে ঘুরে কাঁচা ভাঙা ও দুর্বল বাড়ি থেকে লোকজনকে তুলে আশ্রয় শিবিরে নিয়ে আসার কাজ করছেন। বিশেষ করে ইছামতীর পাড়ে ও রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের সরানো হয়েছে। ৪ হাজার পরিবারকে স্কুল, সিনেমাহল, লজে তুলে আনা হয়েছে বলে জানান শঙ্কর। রাতে সকলকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গাইঘাটা, বনগাঁ ও বাগদা ব্লক থেকেও লোকজনকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার মানুষকে স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, ফ্লাড শেল্টারে তুলে আনা হয়েছে।’’ বাগদা, গাইঘাটা, বনগাঁ থানার পুলিশও মানুষকে সরিয়ে আনার কাজ করছে। পুলিশ জানিয়েছে, গাইঘাটায় প্রায় ৮ হাজার মানুষ এবং আড়াইশো গবাদি পশুকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। করাত কলের কর্মীদের তৈরি রাখা হয়েছে। কোথাও গাছ ভেঙে পড়লে দ্রুত ওই কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবেন।