Cyclone Amphan

আঁধার এখনও ঘুচল না

কয়েক লক্ষ বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যায়। হাজার খানেক ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে পড়ে।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২০ ০৩:৪০
Share:

পাথরপ্রতিমায় দুমড়ে পড়ে রয়েছে টাওয়ার। নিজস্ব চিত্র

২০ মে আমপান ঝড় আছড়ে পড়েছিল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকা-সহ পূর্ব মেদিনীপুর ও হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। ওই দিনের পর থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর উপকূল-সহ ওই তিন জেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছিল।

Advertisement

কয়েক লক্ষ বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যায়। হাজার খানেক ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে পড়ে। একের পর এক সাবস্টেশন অকেজো হয়ে যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, সাগর এলাকায় হাইটেনশন টাওয়ার দুমড়ে-মুচড়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মাঠে নামেনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তারা। এ দিকে, ঝড়ের কয়েকদিন পরেই কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তড়িঘড়ি বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেন। আশপাশের জেলা থেকে ঠিকা শ্রমিক, বিদ্যুতের খুঁটি, এমনকী প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা থেকে গাছ কাটার লোক আনার ব্যবস্থা করা হয়। দফতরের বড় কর্তারা তিন জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।

কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও বিদ্যুৎহীন। লক্ষাধিক লোক এখনও বিদ্যুৎ ছাড়াই রয়েছেন। পাথরপ্রতিমার সুমতি নগর এখনও অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, ‘‘লোকের অভাবে ওই টাওয়ারগুলি মেরামত করা যাচ্ছে না। ঝড়ের দাপটে ওই সব এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। আপাতত বিদ্যুতের খুঁটি ও তার লাগানোর কাজ চলছে। এলাকায় কোনও ভাবেই ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে না।’’

Advertisement

ঝড়ের দাপটে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ মহকুমা। ওই অঞ্চলে সবচেয়ে ধীর গতিতে চলছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের কাজ। প্রায় মাস খানেক পেরিয়ে গেলেও ৩০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ও তার লাগানো এখনও হয়নি। ওই সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কত দিনে স্বাভাবিক ভাবে তা জানাতে পারেননি দফতরের আধিকারিকেরাও। ওই এলাকায় একজন ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ করানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। লোকের অভাবেই কাজ এগোচ্ছে না বলে মনে করছে বিদ্যুৎ দফতর। দফতরের এক কর্তা জানান, ঠিকাদার ও আঞ্চলিক আধিকারিকদের সমন্বয়ের অভাবে সুন্দরবন-সহ আমপান বিপর্যস্ত জেলাগুলিতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। দফতরের এক শীর্ষকর্তা জানান, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। হুগলি জেলা প্রায় পুরোপুরি স্বাভাবিক বলা যেতে পারে। একমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ ক্যানিং মহাকুমার কাজ খুবই ধীর গতিতে হওয়ার ফলে ওই সব অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা এখনও বিদ্যুৎহীন। ওই সব এলাকার বাস্তব পরিস্থিতিও পর্যালোচনা
করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement