রুস্তমের পাকা বাড়ি। ডান দিকে, ওই এলাকারই এক ব্যক্তির ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েতের সদস্য ও তাঁর আত্মীয় পরিজন মিলিয়ে প্রায় ৬ জনের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছে। ওই টাকা ফেরতের জন্য এলাকার বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে ব্লক প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি ওই পঞ্চায়েত সদস্যের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকে কামরপোল পঞ্চায়েতের ওই সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও নাজিরউদ্দিন সরকার বলেন, ‘‘রুস্তম মল্লিক নামে তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত চলছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে টাকা ফেরত নেওয়া হবে।’’
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কামারপোল পঞ্চায়েতে মোট সম্পুর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ছিল ৬৮০। সেখানে পাটদহ গ্রামের ওই পঞ্চায়েত সদস্য রুস্তম প্রায় ৫৬ জনের ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে সদস্যের স্ত্রী-সহ ৬ জন রয়েছেন। পাকা বাড়ির মালিক ওই সদস্যর পরিবার এত জন কী ভাবে টাকা পেলেন— তা নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে বাসিন্দাদের মধ্যে। জানতে পারে ওই ব্লকের দলের নেতারা। এরপরেই ওই সদস্যের শাস্তির দাবিতে ২৫০ জন গ্রামবাসী স্বাক্ষর দেন। প্রশাসনের সমস্ত পর্যায়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ওই গণস্বাক্ষর পাঠনো হয়।
অভিযোগ পাওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে নেতৃত্ব। ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের যুব সভাপতি তৃণমূলের মেহেবুবার রহমান গায়েন বলেন, ‘‘ওই সদস্যের বিরুদ্ধে আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা নিজের পরিবার ও আত্মীয়-পরিজনের নামে তোলা হয়েছে শুনেছি। দল থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে দিয়ে কোনও ভাবে উন্নয়নের কাজ করানো হবে না। ওই গ্রামের বুথ সভাপতি কবিরুল রহমানের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হবে। দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কিনা, তা নিয়েও
চিন্তাভাবনা চলছে।’’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রুস্তম। তিনি বলেন, ‘‘কয়েকজন পাকা বাড়ির মালিকের নাম ভুল করে পাঠিয়েছিলাম। তাঁরা টাকা পেয়েছেন। সেই টাকা ফেরত দেব বলেই ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’ রুস্তম আরও বলেন, ‘‘আমাকে সরিয়ে এলাকার উন্নয়নের টাকা লুটে খাবে বলেই চক্রান্ত হচ্ছে। আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সমস্ত বিষয় জানিয়েছি। তাঁরা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।’’