প্রতীকী চিত্র
এ বার কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ উঠল খোদ বিধায়কের বিরুদ্ধে। এমন নালিশ ঠুকলেন তাঁর দলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। অভিযোগ, কাটমানি দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে অপহরণ করে খুনের হুমকিও দিয়েছেন বিধায়ক।
এমন কাণ্ডের জেরে মালদহের রতুয়ায় ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’। বুধবার জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিধায়কের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূলের ওই নেত্রী।
দলীয় সূত্রে খবর, এ দিন রতুয়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি-সহ অন্য তৃণমূল সদস্যরা জোট বেঁধে থানায় হাজির হন। বিধায়কের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান সভাপতি আবেদা বেগম। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে ধর্নায় বসা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন আবেদা। বিধায়কের বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ তুলে দলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সমস্ত অভিযোগ ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়েছেন বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়।
চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ প্রশাসনের তরফেও অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায়। পুলিশ ও পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় আবাস যোজনা, আইসিডিএস প্রকল্পে ঘর, রাস্তা তৈরি-সহ প্রতিটি কাজের জন্য বিধায়ক কাটমানি চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তা দিতে রাজি হননি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। অভিযোগ, কাটমানি না দিলে অপহরণ করে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয় বলে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন আবেদা।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবেদা বলেন, ‘‘দিদির নির্দেশ, কাউকে কাটমানি দেওয়া চলবে না। কাজ ঠিকঠাক করতে হবে। সেটাই করছি। তার পরেও কেন কাটমানি দেব? পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে ধর্নায় বসবো।’’ সমর অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছেন, ‘‘ওঁরা দুর্নীতি করছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ায়
উল্টে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। আমি কাটমানি চাইনি, অপহরণ করে খুনের হুমকি দেওয়া তো অনেক দূরের কথা।’’
জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। তবে আমাকে এমন অভিযোগ কেউ জানাননি। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে দলগত ভাবে যাতে সমস্যা মিটে যায় তা দেখছি।’’
জেলা তৃণমূল নেতাদের একাংশের বক্তব্য, রতুয়ায় বিধায়কের সঙ্গে দলের ‘বিপক্ষ গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব’ নতুন কিছু নয়। বছরখানেক আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সমর মুখোপাধ্যায়। কংগ্রেসে থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক বেনিয়মের অভিযোগে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রতুয়ার তৃণমূল নেতৃত্ব। তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্তের দাবিতে ফের প্রশাসনের দ্বারস্থ হন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ।