উদ্বেগজনক: এই ছবিই দেখা গেল প্রায় সর্বত্র। রবিবার ক্যানিংয়ে।
আগের বার ছিল বিরাট আয়োজন। এ বার সবই ভোঁ-ভাঁ।
টিকিট কাউন্টারের সামনে গোল দাগ এঁকে যাত্রীদের নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে দাঁড়ানোর নির্দেশ ছিল। কামরায় দু’টি আসনের মাঝের একটি আসনে কাটা দাগ দিয়ে যাত্রীদের বসতে নিষেধ করা হয়েছিল। যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা ছিল অনেক জায়গায়। ছিল রেলপুলিশে নজরদারি।
রবিবার অবশ্য সে সব কিছুই তেমন চোখে পড়ল না দুই ২৪ পরগনার স্টেশনগুলিতে। ভিড় এড়াতে পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালানোর কথা বলা হলেও রেলের কর্তাদের তা বিশেষ মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয়নি। রবিবার ছুটির দিনেই এই অবস্থা হলে আজ, সোমবার থেকে কী পরিস্থিতি হবে, তা ভেবে শিউরে উঠছেন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন।
এ দিন উত্তরে বনগাঁ, হাসনাবাদ থেকে দক্ষিণে ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার— সর্বত্রই ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মে ভিড় ছিল। রবিবার বনগাঁ স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, সিটের মাঝে লাগানো স্টিকার তুলে ফেলা হয়েছে। গায়ে গা লাগিয়ে বসছেন যাত্রীরা। দূরত্ববিধির বালাই নেই। স্টেশনে ঢোকার মুখে থার্মাল গান দিয়ে যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়নি। ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনও ঘোষণা।
ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার-সহ দক্ষিণ শাখার ট্রেনগুলিতেও দূরত্ববিধি ভুলে ভিড় হয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে রেল বা প্রশাসনের কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। যাত্রীরা জানালেন, এত দিন ‘স্টাফ স্পেশাল’ নাম দিয়ে অনেক ট্রেনই চলছিল। সাধারণ যাত্রীরাও টিকিট কেটে যাতায়াত করছিলেন। সে দিক থেকে নতুন কিছুই হয়নি। তবে ট্রেনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। হাবড়ার নিত্যযাত্রী বিদ্যুৎ সাহা বলেন, “আগে ট্রেন চললেও দীর্ঘ সময় পর পর আসত। ফলে ভিড় বেড়ে যেত। এখন ঘন ঘন ট্রেন চলবে। ফলে ভিড় কম হবে বলে আশা করা যায়।” শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখার নিয়মিত যাত্রী বসিরহাটের বাসিন্দা শ্যামল মিত্র আবার মনে করেন, সংক্রমণ যখন ফের ঊর্ধ্বগামী, তখন কালীপুজো পর্যন্ত ট্রেন বন্ধ থাকলেই ভাল ছিল। তবে প্ল্যাটফর্মে থাকা অস্থায়ী দোকানি ও হকারেরা জানাচ্ছেন, এতদিন যাত্রীর সংখ্যা কম ছিল। রুজিরোজগার কমে গিয়েছিল। যাত্রী বাড়লে এ বার ব্যবসা বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।