অস্ত্রোপচারের পরে মায়ের কোলে ঋষিতা। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
জন্মের ৪০ দিনের মাথায় পৃথিবীর আলো দেখল এক শিশুকন্যা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, নদিয়ার তেহট্টের নন্দনপুরের বাসিন্দা কৈলাস বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী অনামিকা বিশ্বাসের মেয়ের জন্ম থেকেই দু’চোখের দু’টি পাতার ধার জোড়া ছিল। তারই অস্ত্রোপচার হল শনিবার দুপুরে, দক্ষিণ দমদম পুর হাসপাতালে।
পরিবার সূত্রের খবর, তেহট্টের একটি হাসপাতালে ওই শিশুর জন্ম। জন্মের পরেই তার চিকিৎসা শুরু হয়। শিশুর বাবা কৈলাস জানান, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে তারিখ পেতে দেরি হয়ে যাচ্ছিল। বেশি দেরি হলে দৃষ্টি না ফেরার আশঙ্কাও ছিল। তখনই তিনি জানতে পারেন দক্ষিণ দমদম পুর হাসপাতালের কথা।
এ দিন সেখানেই তিনি মেয়েকে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক দেবাশিস মণ্ডল শিশুটিকে দেখে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। ওই অস্ত্রোপচারে শিশুটির দু’চোখের পাতা দু’টি আলাদা করা সম্ভব হয়েছে। দেবাশিস জানান, এই সমস্যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে অ্যাঙ্কিলোব্লেফারন। এ ছাড়া গন্না কাটা এবং টাকরাও কাটা ছিল বাচ্চাটির। ফলে সমস্যা জটিল হয়েছিল। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই চিকিৎসক। ঋষিতা নামে শিশুটির সফল অস্ত্রোপচারে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তার বাবা-মা।
শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি বলছেন, ‘‘গন্না কাটা ও টাকরা কাটার সমস্যা অনেক দেখা যায়। কিন্তু এ সবের সঙ্গে দু’টি চোখের পাতা জুড়ে থাকা সচরাচর শোনা যায় না। এখন গন্না কাটা এবং টাকরা কাটার অস্ত্রোপচার তুলনায় সহজ হলেও জুড়ে থাকা চোখের পাতাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া কিছুটা হলেও জটিল। দেরি হলে এ ক্ষেত্রে দৃষ্টি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।’’ দক্ষিণ দমদম পুর হাসপাতালের চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস বলছেন, ‘‘সীমিত পরিকাঠামো নিয়েও পুর হাসপাতালে এ ধরনের চিকিৎসা যে সম্ভব, সেটা প্রমাণ হল।’’