Cracker Dealers

পুজোর মরসুমেও নেই বাজির চাহিদা, চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

বিক্রি বন্ধ থাকায় বাজির উৎপাদনও প্রায় বন্ধ। কাজ হারিয়েছেন বহু শ্রমিক। অনেকেই বাজির কাজ ছেড়ে মাছ, অনাজ বিক্রি করছেন, কেউ বা দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

চম্পাহাটি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০১:১৫
Share:

n ক্রেতা নেই। হতাশ ব্যবসায়ী। নিজস্ব চিত্র।

এ বার টান পড়ল বাজি বাজারেও। দুর্গাপুজো চলে এলেও বাজি বাজার ফাঁকাই থেকে গিয়েছে।

Advertisement

অন্য বছর এই সময় দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটির হাড়াল বাজি বাজারে গা গলানো যেত না। সেখানে এ বছর খরিদ্দারের দেখা নেই বললেই চলে। বেশির ভাগ বাজির দোকানপাট বন্ধ। যে দু-চারটে দোকানপাট খোলা রয়েছে সেখানকার ব্যবসায়ীরা কার্যত মাছি তাড়াচ্ছেন। অন্য বছর এই সময় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই বাজি বাজারে আসতেন। বিশেষ করে পুজোর আগে এই বাজারে পাইকারি ব্যবসায়ীদের ভিড় থাকত। কিন্তু এ বার করোনা পরিস্থিতিতে কেউই প্রায় আসছেন না বাজির বাজারে। ফলে এ বার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন বাজি ব্যবসায়ীরা। বাজি ব্যবসায়ী অর্জুন মণ্ডল, অসিত হালদার, সোমনাথ রায়রা বলেন, “বাজারে কোনও খরিদ্দার নেই। জানি না এ বার কী হবে? মহাজনের থেকে সুদে নিয়ে অনেক টাকা লগ্নি করেছি ব্যবসায়। পুজোয় ব্যবসা করে শোধ দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু যা অবস্থা তাতে এ বার কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।”

শুধু দুর্গাপুজো বা কালী পুজো নয়, বিয়ে, জন্মদিন-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আতসবাজি ফাটানোর চল বেড়েছে। কিন্তু এই করোনা আবহে বন্ধ সব কিছুই।

Advertisement

বিক্রি বন্ধ থাকায় বাজির উৎপাদনও প্রায় বন্ধ। কাজ হারিয়েছেন বহু শ্রমিক। অনেকেই বাজির কাজ ছেড়ে মাছ, অনাজ বিক্রি করছেন, কেউ বা দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। চম্পাহাটি বাজি ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, প্রত্যক্ষ ভাবে এই ব্যবসার সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জড়িত, পরোক্ষ ভাবে আরও লক্ষাধিক মানুষ এই বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। খরিদ্দারের দেখা না মেলায় বাজি বিক্রি প্রায় বন্ধ। ফলে এত মানুষ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এই ব্যবসায় যাঁরা লক্ষ লক্ষ টাকা লগ্নি করেছেন সেই ব্যবসায়ীদের অবস্থা আরও খারাপ। এর মধ্যেও কিছু ব্যবসায়ী নিজেরা বাজির কাজ করছেন ভবিষ্যতে পরিস্থিতি ভাল হওয়ার আশায়। তবে কবে যে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা কেউ জানেন না।

চম্পাহাটি হাড়াল বাজি ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম সদস্য সুধাংশু দাস, অজয় চক্রবর্তীরা বলেন, “এই পেশার সঙ্গে জড়িত বিপুল পরিমাণ মানুষ এ বার ক্ষতির মুখে পড়েছেন। শিক্ষিত বেকার যুবকরা সরকারি চাকরি না পেয়ে এই পেশা বেছে নিয়েছেন। ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে তাঁরা কার্যত দিশেহারা।” বাজি ব্যবসা ও উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত মানুষ চাইছেন, এই শিল্পের পাশে দাঁড়াক সরকার। না হলে আগামি দিনে আর্থিক মন্দার কারণে বহু পরিবার সমস্যায় পড়তে পারেন। বাজি ব্যবসায়ী খোকন মণ্ডল, নিখিল সর্দাররা বলেন, “দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে সরকার মোটা টাকা আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে, আমাদের পাশেও দাঁড়াক সরকার। না হলে আমরা কোথায় যাব?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement