বাঁ দিক থেকে, পারমিতা, সূর্য এবং আজিজুর। নিজস্ব চিত্র।
এখনও পর্যন্ত ঘোষিত ২১টি আসনের মধ্যে নতুন মুখ ৭।
প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে শুধু নতুন মুখের বিচার নয়, রাজনৈতিক পরিপক্কতাও প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের নেতাদের বক্তব্য।
জেলার ৩১টি বিধানসভা আসনে এখনও পর্যন্ত সিপিএম ২১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সোনারপুর, গোসাবা, বাসন্তী ও সোনারপুর (দক্ষিণ) আসন শরিকদের ছাড়া হয়েছে। পাথরপ্রতিমা, ক্যানিং (পশ্চিম), জয়নগর বজবজ, মগরাহাট (পশ্চিম) কাকদ্বীপ আসন সমঝোতার আওতায় রয়েছে বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী বাছাই করা হয়নি। রাজ্য সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কেন্দ্রে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সুজন চক্রবর্তীর নাম উঠে এলেও জেলা সিপিএম সূত্রের দাবি, সুজনবাবুর তাতে আপত্তি রয়েছে। জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সুজনবাবু। সে ক্ষেত্রে যাদবপুর পুনর্বিবেচনার পর্যায়।
দলের সক্রিয় সমর্থক পেশায় কৃষিবিজ্ঞানী, সাগরের বাসিন্দা অসীম মণ্ডল। এক দিকে, অধ্যাপক। অন্য দিকে, রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ। সাগরে দলীয় কর্মীদের ক্ষেত্রে বছর পঞ্চাশের ওই বিজ্ঞানীর জনপ্রিয়তা রয়েছে বলেই মনে করছেন জেলা নেতারা।
পেশায় আইনজীবী জেলা পরিষদের সদস্য কুলপির প্রার্থী রেজউল হক। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের তাণ্ডবেও রেজাউলকে ধরশায়ী করা যায়নি। অতএব তৃণমূলের শক্তঘাঁটিতে রেজাউলই যোগ্য ব্যক্তি বলে মনে করেন সিপিএম নেতারা।
সাতগাছিয়া কেন্দ্রে দলীয় কোন্দলে প্রায় প্রাণওষ্ঠাগত শাসক দলের হেভিওয়েট প্রার্থী তথা ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহের। নাম ঘোষণা হওয়ার পরেও তেমন ভাবে এখনও প্রচারে নামতে পারেননি তিনি। ওই কেন্দ্রে সিপিএমের নতুন মুখ পারমিতা ঘোষ। কলেজের গণ্ডি পেরিয়েছেন বছর কয়েক আগে। যুব সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য। একে বারে তরুণ তুর্কি। মহেশতলা এলাকার বাসিন্দা তিনি। সোনালির বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ আছে, বিধায়ক এলাকায় আসেন না। ফোনও ধরেন না। সাধারণ মানুষের কাছে অধরা তিনি। সিপিএমের নেতাদের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে প্রায় ‘পাড়ার পাশের বাড়ির মেয়ে’র ভাবমূর্তি কাজ করতে পারে।
বাবা জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি। বামপন্থী পরিবারে ছেলে পেশায় এম টেক ইঞ্জিনিয়র সূর্য মিস্ত্রি। বারুইপুর (পূর্ব) কেন্দ্রের প্রার্থী তিনি।
ক্যানিং (পূর্ব) কেন্দ্রে প্রার্থী বছর পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই আজিজুর রহমান লড়ছেন সিপিএমের টিকিটে। ভাঙড় ২ জোনাল কমিটির সদস্য আজিজুরকে টক্কর নিতে হবে ভাঙড়েরই সিপিএমের প্রাক্তন জোনাল কমিটির সম্পাদক, বর্তমানে তৃণমূল প্রার্থী সওকত আলি মোল্লার সঙ্গে। জেলা সিপিএমের এক নেতার কথায়, ‘‘ওই এলাকায় সংগঠন জোরদার নয়। কিন্তু সওকতের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবেন আজিজুর।
গত লোকসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের অধীনে ফলতা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির ফলাফল আশাতীত। সে ক্ষেত্রে বাম নেতাদের বক্তব্য, নতুন প্রজন্ম বিজেপির দিকেই ঝুঁকেছিল। বিজেপির ঝুলি ভরিয়েছিল বামপন্থী নতুন প্রজন্মের ভোটারাই। সে কারণেই ফলতা পঞ্চায়েতের বিরোধী নেতা বয়সে নবীন বিধান পাড়ুই লড়ছেন ফলতা থেকে। পঞ্চায়েত সমিতিতে রাজনৈতিক লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা বিধানসভা ভোটেও তাঁকে মাইলেজ দেবে, মনে করছেন দলের নেতারা।