বন্দি গরু। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
চালকের আসনের পাশে একটি সিট। সেখানে কখনও খালাসির দেখা মেলে, কখনও আসন খালি। আর ছোট যাত্রিবাহী গাড়ির পিছনের সিটগুলি সব খুলে ফেলা হয়েছে। উঁকি মেরে দেখা গেল, সেখানেই ঠাসাঠাসি করে গোটা পাঁচেক গরুকে পা-মুখ বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বনগাঁর ঘোনার মাঠ এলাকা থেকে শুল্ক দফতরের কর্তারা এমনই একটি গাড়ি আটক করেছেন। পাঁচটি গরু উদ্ধার করা হয়েছে সেখান থেকে। চালক পলাতক। গাড়ির সামনে ইংরেজি হরফে ‘ডাক্তার’ লেখা স্টিকার সাঁটানো ছিল। যদিও গাড়িটি আদৌ কোনও চিকিৎসকের নয় বলেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতেই ভুয়ো স্টিকার লাগানো হয়েছিল।
গোটা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে গরু পাচার রুখতে গত কয়েক মাসে পুলিশি ধড়পাকড় বেড়েছে। পুলিশের দাবি, গত ছ’মাসে বসিরহাট-বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে গরু পাচার কমেছে। যশোর রোড ধরে ট্রাকে করে শ’য়ে শ’য়ে গরু নিয়ে আসার দৃশ্যও ইদানীং অবশ্য তেমন চোখে পড়ছে না।
কিন্তু তা বলে গরু পাচার একেবারে থেমে নেই। পুলিশি নজরদারি এড়াতে পাচারকারীরা নতুন ছক কষেছে। তদন্তকারী অফিসারেরা জানাচ্ছেন, বড় বড় ট্রাকের বদলে ইদানীং চোখে পড়ছে, ছোট যাত্রিবাহী গাড়িতে দু’চারটি করে গরু পাচার চলছে। বাইরে থেকে চট করে দেখে বোঝার উপায় নেই, ঝাঁ চকচকে গাড়ির পিছনের সিটগুলি ফাঁকা। ওই সিট তুলে দিয়েই মেঝেতে গরুকে ফেলে রাখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বনগাঁর মহকুমায় এ ধরনের গোটা পনেরো গা়ড়ি আটক করেছে পুলিশ।
এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘গত তিন মাসে বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে শ’পাঁচেক গরু আটক করা হয়েছে। দেড়শো জনের মতো পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ ছোট গাড়িতে গরু পাচার বন্ধ করতে রাস্তায় বিশেষ পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।