এক দিকে তখন রাজনীতির উত্তেজনা তুঙ্গে, তবে বাধা পড়ল না জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে। — নিজস্ব চিত্র।
মাত্র কুড়ি ফুট দূরে চলছে গোলমাল। পুলিশ এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মধ্যে তীব্র টানাপড়েন। কিন্তু সরস্বতী পুজোর দিনে যুগলদের ইছামতীর পারে সময় কাটানোর মধ্যে তার যেন কোনও ছাপই পড়ল না। বুধবার সকালে টাকিতে দেখা গেল, একই সঙ্গে পুজো আর ভ্যালেন্টাইন্স ডে উদযাপন।
দিনভর উৎসবের মেজাজ গ্রাম-শহরের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে। এ দিকে, সন্দেশখালির ঘটনার জেরে গত কয়েক দিন তেতে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার এই প্রান্ত। বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারের কর্মসূচির জেরে উত্তাপ ছড়িয়েছে টাকিতেও। তবে এ সবের জেরে টাকিতে ভাটা পড়ল না সমারোহের। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভিড় উপচে পড়ল নদীর ধারে, উদ্যানে। চড়া দামে বিক্রি হল ফুল। ফুচকা, ঝালমুড়ির দোকানেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সুসজ্জিত তরুণ-তরুণীদের সেলফি তোলার দৃশ্য পড়ল আকছার। এ সবের মধ্যেই দেখা গেল, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে একটি সরস্বতী প্রতিমা কোলে নিয়ে দৌড়ে ইছামতী নদীর ধারে পৌঁছলেন। নদীর ধারেই পুজো করতে বসেন তিনি।
মুহূর্তে তাঁকে ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। ঘাড় ঘুরিয়ে সে সব দেখলেও তরুণ জুটিদের মগ্নতায় তেমন ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি রাজনীতির আলোড়ন। সুকান্ত যেখানে পুলিশ বেষ্টিত হয়ে পুজোয় বসেছিলেন, সেখান থেকে ২০ ফুট দূরে টাকি রাজবাড়ির রাস্তা দিয়ে লোকজন খোশমেজাজে গল্প করতে করতেই ঘোরাফেরা করছিলেন।
বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিও তেমন ছিল না। বরং পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের ভিড় ছিল বেশি। পুলিশের সঙ্গে যখন ধস্তাধস্তি চলছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের, খানিক দূরে তখন হাতে হাত রেখে বহু যুগলকে নিশ্চিন্তে হাঁটতে দেখা গেল।
ফুচকার ঝালে হুসহাস করতে করতে এক তরুণী পরে বললেন, ‘‘বচ্ছরকার দিন বলে কথা। কোথায় কী হচ্ছে, সে সব জেনে আমাদের কাজ নেই। মনের মানুষের সঙ্গে দেখা করার এই সুযোগ কোনও মতেই ছাড়তে পারব না!’’