প্রতীকী ছবি।
পাকা বাড়ি রয়েছে, অথচ আবাস যোজনায় নাম নথিভুক্ত হয়েছে উস্তির মগরাহাট ১ ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও তাঁদের পরিবারের। এই অভিযোগ তিলে ‘প্রকৃত প্রাপকেরা’ ক্ষুব্ধ।
উস্তির মগরাহাট ১ ব্লকে ১১টি পঞ্চায়েত রয়েছে। এর মধ্যে ইয়ারপুর ছাড়া বাকি কোনও পঞ্চায়েতে বিরোধীদের অস্তিত্ব নেই। অভিযোগ, সমীক্ষার কাজে গিয়ে স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও আশাকর্মীরা ভয়ে ঠিকঠাক তালিকা তৈরি করতে পারেননি। অনেক বাড়ি তাঁরা নিজের চোখে না দেখেই তালিকায় নাম তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠছে স্থানীয় স্তরে। আর এ ভাবেই তালিকায় ঢুকেছে বহু বেনোজল। বিরোধীশূন্য অধিকাংশ পঞ্চায়েত নিজের মতো করে তালিকা তৈরি করেছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। উস্তি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান আজিজেল মোল্লা ও তাঁর দুই ছেলের নাম আবাস যোজনায় তালিকায় আছে। উত্তর কুসুম, হরিহরপুর পঞ্চায়েতের এক সদস্য ও তাঁর কয়েকজন আত্মীয়-পরিজনের নাম তালিকায় আছে বলে অভিযোগ। এঁদের সকলরেই পাকা বাড়ি আছে বলে দাবি বিরোধীদের।
মগরাহাট ১ ব্লকের সিপিএম নেতা সানোয়াজ মোকামির অভিযোগ, ‘‘শাসকদলের নেতা, পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান ও উপপ্রধান কোথাও নিজের নামে কোথাও বা তাঁদের ঘনিষ্ঠদের নামে আবাস যোজনায় বাড়ি পেতে চলেছেন। প্রকৃত প্রাপ্যকদের নাম নথিভুক্ত করতে হবে, ভুয়ো নাম বাতিল করতে হবে বলে আমরা দাবি করছি।’’
স্থানীয় বিজেপি নেতা নিতাই মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিয়ে আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজের নামে ছেলেখেলা হয়েছে। তাঁরা ভয়ে ভয়ে কাজ করেছেন। রাস্তায়-ঘাটে দেখা হলে তৃণমূল নেতাদের ফোন নম্বর ও নাম নিয়ে তালিকা তৈরি করে পঞ্চায়েতে জমা দিয়েছেন। তালিকায় নাবালক, স্কুল-কলেজে পড়ুয়ার নামও নথিভুক্ত হয়েছে। স্বচ্ছ্ব ভাবে নামের তালিকা তৈরি করতে হলে সর্বদল় কমিটি তৈরি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা চালানো দরকার। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের তা হওয়া উচিত।’’ এ বিষয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধান আজিজেল মোল্লা বলেন, ‘‘আমি মাটির বাড়িতে থাকি। আমার দুই ছেলেরও মাটির বাড়ি। তাই নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। এখানে কোনও দুর্নীতি হয়নি।’’
মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘২০১৮ সালে ওই তালিকা তৈরি হয়েছিল। সে সময়ে অনেকের বাড়ি মাটির ছিল। এই সময়ের মধ্যে কেউ কেউ পাকা বাড়ি করেছেন। তবে যাঁদের পাকা বাড়ি আছে, তাঁরা কোনও ভাবেই আবাস যোজনায় নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন না। সে দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন। নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।’’ মগরাহাট ১ বিডিও ফাতেমা কাওসার জানান, যাঁরা প্রকৃত ঘর পাওয়ার যোগ্য, কেবলমাত্র তাঁদেরই নাম নথিভুক্ত থাকবে। ইতিমধ্যে লক্ষ্মীকান্তপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তাঁর স্ত্রীর নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন। বাকি অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।