জীবাণুনাশ: বসিরহাট থানা চত্বরে। নিজস্ব চিত্র
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একশো পেরোল বসিরহাটে। আক্রান্তদের মধ্যে বসিরহাট থানার একজন অফিসারও আছেন। এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন থানা কর্তৃপক্ষ। থানা বাড়ি, চত্বর এবং পুলিশ ব্যারাক-সহ আশপাশের এলাকা ইতিমধ্যে দমকল কর্মীদের দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। আগে থানায় ঢুকলে গেটের সামনে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার হচ্ছিল। অফিসারদের ঘরের সামনে একই ভাবে হাতশুদ্ধি রাখা ছিল। অভিযোগ জানাতে আসা সকলে ঘরে ঢোকার বদলে জানলা দিয়ে অভিযোগের কাগজ দিচ্ছিলেন। এত সব সত্ত্বেও থানার অফিসার আক্রান্ত হওয়ায় চিন্তিত থানার বাকি পুলিশকর্মী ও তাঁদের পরিবার।
যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। মানুষের সচেতনতা না বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত বসিরহাটে লালারস পরীক্ষায় ১০৬ জনের করোনা পজ়িটিভ মিলেছে। এঁদের ৬৮ জন পরিয়ায়ী শ্রমিক।’’
সম্প্রতি বসিরহাট থানার এক অফিসার অসুস্থ বোধ করায় তাঁর লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এ দিন রিপোর্টে জানা যায়, পজ়িটিভ। ওই অফিসারকে কোভিট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তাঁর সংস্পর্শে আসা ১০ জনকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার পরেও কিন্তু বসিরহাট শহরের রাস্তায় ভিড় কমেনি। দোকানপাট, অফিস খুলেছে। যানবাহন চলছে। ফলে ভিড় সর্বত্রই। বহু মানুষের মুখে মাস্কটুকুও নেই। আমপান বিধ্বস্ত এলাকায় অধিকাংশ মানুষকে মাস্ক পরতে বা হাত ধুতে দেখা যাচ্ছে না বলে খোঁজ আসছে।
বসিরহাটে একটি মাত্র কোভিড হাসপাতাল। চারশোর বেশি কোয়রান্টিন সেন্টার হয়েছে। কমপক্ষে ১০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। সব মিলিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, হাজার দু’য়েক শ্রমিক বসিরহাটের মেরুদন্ডিতে স্বাস্থ্যপরীক্ষার আগেই গাড়ি থেকে নেমে গিয়েছেন। তাঁদের শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
এত সবের মধ্যেও দেড় হাজারের বেশি পরিযায়ী শ্রমিকের লালারস পরীক্ষা করা হয়েছে। অধিকাংশ করোনা আক্রান্তের শরীরে উপসর্গ না থাকায় বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, ‘‘করোনা নিয়ে অবহেলা করলে বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে বেশি সময় লাগবে না।’’