ছবি পিটিআই।
লকডাউনের শুরু থেকেই দাম বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের। বসিরহাটের বাজারগুলিতে শেষ পর্যন্ত হানা দিতে হয়েছে পুলিশকে। তাতে কালোবাজারি কিছুটা কমলেও গত ১০ দিনে জিনিসপত্রের দাম কমানো যায়নি।
সামান্য মোটা চাল আজ মহার্ঘ। আলু-তেল-ডালও নাগালের বাইরে যাচ্ছে ক্রমশ। শহরাঞ্চলে তা-ও কিছুটা ভারসাম্য থাকলেও গ্রামাঞ্চলে জিনিসপত্রের দাম দিন দিন বাড়ছে বলেই অভিযোগ। তবে এরই মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে আনাজের দাম। আলু ছাড়া অন্যান্য আনাজের দাম নিম্নমুখী। বনগাঁ-সহ জেলার কিছু জায়গায় আবার দাম তেমন বাড়েনি।
দেশজোড়া লক ডাউন ঘোষণা হতে না হতেই বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়তে শুরু করে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এবং সুন্দরবন লাগোয়া বাজারে জিনিসপত্র কালোবাজারি হচ্ছে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। আগে বসিরহাট শহরের নতুন বাজারে যে চালের দাম ছিল কেজি প্রতি ৩৮ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৪৪ টাকা হয়েছে। ১৩ টাকার আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮ টাকা কেজি দরে। এক কেজি মুসুর ডাল ৯০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১৮ টাকা। ৯৮ টাকা লিটার সর্ষের তেল বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। ৭২ টাকার সয়াবিন বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে। তবে ডিমের দামে বিশেষ হেরফের হয়নি। ৩০টি ডিম আগের মতো এখনও ১২০ টাকাতেই বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ক'দিন আগে ক্যানিংয়ে ডিমের দাম কমেওছিল।
বনগাঁর বাজারে আবার বেড়েছে ডিমের দাম। প্রতিটি ডিমের দাম কোথাও বেড়েছে দেড় টাকা। কোথাও আবার আড়াই টাকা। তবে চাল-ডাল-তেল-আলুর দাম খুব সামান্যই বেড়েছে। লকডাউনের মধ্যেও যা স্বস্তি দিচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বনগাঁ কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা গেল, লকডাউনের আগে যে চাল প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৩ টাকা। আগে যে সর্ষের তেল ৯০ টাকা প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছিল, এখন তার দাম ৯৫-১০০ টাকা । মুসুর ডালের দাম বাড়েনি। তবে দাম কমেছে পেঁয়াজের। অভিযোগ, ডিমের জোগান থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীদের একাংশ ডিম মজুত করে কৃত্রিম অভাব তৈরি করছেন। তার ফলেই ডিমের দাম বেড়েছে। কমেছে পটল-ঢেঁড়শের দাম। যে পটল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছিল ৪০-৪৫ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৭-১৮ টাকায়। পুলিশ এবং পুরসভার তরফ থেকে বাজারগুলিতে নিয়মিত নজরদারি চলছে বলেই দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ব্যারাকপুর মহকুমার শহরগুলিতে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তবে তা এখনও নাগালের বাইরে যায়নি বলেই মনে করেছেন ক্রেতারা। ৪০ টাকা কেজি দরের চালের দাম গত কয়েক দিনে কেজিতে বেড়েছে ৮ টাকা। কেজিতে পাঁচ টাকা দাম বেড়েছে আলুর। পেঁয়াজের দাম রয়েছে নাগালের মধ্যেই। দাম বেড়েছে ডিম এবং সরষের তেলেরও। দাম কমেছে আনাজের। তবে গ্রামাঞ্চলে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে অনেকটাই। ১০০ টাকা কেজি দরের মসুর ডাল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি আনাজ উৎপাদন হয় উত্তর ২৪ পরগনায়। কিন্তু লকডাউনের ফলে বন্ধ ট্রেন, গণপরিবহণও বন্ধ। তার ফলে প্রত্যন্ত এলাকার চাষিরা আনাজ হাট বা পাইকারি বাজারে নিয়ে যেতে পারছেন না। তার ফলে আনাজের দাম অনেকটাই কমেছে। আবার গ্রীষ্মকালীন আনাজের জোগান বেড়ে যাওয়াও দাম কমার আর একটি কারণ। ফড়েদের দাপট কমায় পাইকারি এবং খুচরো দামের ফারাকও কমেছে অনেকটাই।