Coronavirus

হেঁশেল ঠেলে বাড়িতে খাবার পৌছচ্ছে পুলিশ

লকডাউনের নিয়ম ভেঙে যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁরা অনেকেই জানিয়েছেন, নেহাতই রুটি-রুজির টানে বেরিয়েছিলেন পথেঘাটে।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০ ০২:১৯
Share:

দেখভাল: এই খাবারই যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

লকআপে বন্দিদের খাবার-দাবার দিতে হয় পুলিশকে। তা বলে আইন ভাঙার অপরাধে পুলিশ যাদের রাস্তা থেকে ধরে আনল, তাদের বাড়িতেও খাবার পৌঁছে দেওয়ার নজির বড় একটা নেই!

Advertisement

কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতিতে সেই কাজও করতে হচ্ছে বীজপুর থানার পুলিশকে। কারণ, লকডাউনের নিয়ম ভেঙে যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁরা অনেকেই জানিয়েছেন, নেহাতই রুটি-রুজির টানে বেরিয়েছিলেন পথেঘাটে। কাজ না করলে সংসার আর চলছে না। কারও বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেনি পুলিশ, উল্টে ওই সব পরিবারগুলির হাতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কাঁচরাপাড়ায় চলছে এমন কর্মকাণ্ড। সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে হেঁশেল সামলাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: বন্ধ তাঁতকল, সঙ্কটে কর্মীরা

যাঁদের বাড়িতে খাবার যাচ্ছে, তাঁদের কেউ রিকশাচালক, কেউ পরিচারিকা, কেউ আবার দিনমজুর। পেটের টানে লকডাউন অমান্য করেই পুলিশের হাতে পড়েছিলেন। আপাতত রোজ প্রায় দেড়শো বাড়িতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ। এ ছাড়াও, বেশ কিছু বাড়িতে চাল-ডাল এবং শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রায় পঁচিশ দিন হয়ে গেল, চলছে এই কাজ। লকডাউন যত দিন চলবে, তত দিনই চলবে কর্মসূচি, জানিয়েছেন বীজপুর থানার আইসি কৃষ্ণেন্দু ঘোষ।

বীজপুর থানার এক অফিসার জানান, লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই তাঁরা ধরপাকড় শুরু করেন। প্রথম দিন কয়েকজনকে ধমকধামক দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়। পর দিন রাস্তায় ফের বেরোন তাঁদের অনেকে। কয়েকজনকেও থানায় সাবধান করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ফের তাঁদের রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ। কথা বলে জানা যায়, মূল সমস্যাটা রুটিরুজির।

শ্যামল সর্দার (নাম পরিবর্তিত) নামে এক রিকশাচালক জানান, দু’তিনজন যাত্রী পেলে তাঁর এক দিনের চালের জোগাড় হবে। বাড়িতে স্ত্রী-দুই সন্তান ছাড়াও বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছেন। রাস্তায় না নামলে না খেয়ে মরতে হবে। আর একজন জানান, অন্যের বাড়ির বাগান পরিষ্কার করে সংসার চলে তাঁর।

কৃষ্ণেন্দু বলেন, “এই সব ঘটনা সামনে আসায় আমরা বুঝতে পারি, লকডাউন সফল করতে হলে অন্য পদক্ষেপ করতে হবে। তারপরেই কমিউনিটি কিচেন চালুর কথা ভাবা হয়।’’ খরচ আপাতত থানার নিজস্ব তহবিল থেকেই দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশের রক্তচক্ষুর ভয়ে যাঁরা তটস্থ থাকতেন এত দিন, তাঁরাই এখন অন্য রূপে দেখছেন উর্দিধারীদের।

আরও পড়ুন: বৃদ্ধার শেষকৃত্যে পাশে নেই স্বজনেরা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement