দূর-শিক্ষা: স্কাইপে চলছে পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র
ছুটি, তবু ছুটি নয়। ক্লাস চলছে পুরোদমে। ঘড়ি ধরে সময় মেনে ক্লাস করাচ্ছেন শিক্ষকেরা। মন দিয়ে নোট নিচ্ছেন, পড়া বুঝে নিচ্ছেন পড়ুয়ারাও। ফলে লকডাউনেও সিলবাস সময়ে শেষ হওয়ার নিশ্চয়তা মিলছে। পুরো ব্যবস্থাটাই চলছে অনলাইনে।
ভারতের বাইরের অনেক দেশেই করোনা-আতঙ্কে গৃহবন্দি ছাত্ররা আপাতত অনলাইনেই চালাচ্ছেন পড়াশোনা। কিন্তু সুন্দরবন ঘেষা মিনাখাঁ-ও যে সেই পথের পথিক হয়েছে সেটাই মস্ত প্রাপ্তি বলে মনে করছেন পড়ুয়ারা। এমন ব্যবস্থা চালু করতে পেরে খুশি কলেজ কর্তৃপক্ষ। মূলত ‘স্কাইপ’ অ্যাপের মাধ্যমে চলছে অনলাইন ক্লাস। আর ক্লাস-নোট বা অন্য নথিপত্র আদানপ্রদান চলছে গুগল ‘ক্লাসরুম’ অ্যাপের মাধ্যমে।
সুন্দরবনের প্রায় প্রত্যন্ত এলাকা মিনাখাঁর বামনপুকুরে রয়েছে হুমায়ুন কবীর মহাবিদ্যালয়। আরও কত দিন কলেজ বন্ধ থাকবে তা এখনও জানা যায়নি। পড়ুয়াদের কথা মাথার রেখে ওই কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের বাড়িতে বসে পড়ুয়াদের অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস করছেন। রবিবার বা অন্য ছুটির দিনেও বন্ধ থাকছে না ক্লাস। কলেজের অধ্যক্ষ সুভাষ বিশ্বাস জানান, শিক্ষাবিজ্ঞান, ইংরেজি, ইতিহাস এবং সংস্কৃতের ক্লাস নিয়মিত হচ্ছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কখন কোন ক্লাস হবে, তা আগে থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পড়ুয়াদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সময় মেনে পড়ুয়ারা সময় মতো বাড়িতে বসে মোবাইল অ্যাপ খুলে নিজেকে যুক্ত করে নিচ্ছে। শিক্ষকেরা বাড়িতে বসেই ক্লাস করছেন। পড়ুয়াদের প্রশ্নের উত্তরও দিচ্ছেন। ক্লাসের পরে গুগল ক্লাসরুম অ্যাপের মাধ্যমে নোটসও পেয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা। রবিবার, জনতা কার্ফুর দিন ক্লাস করেছেন শিক্ষাবিজ্ঞানের শিক্ষিকা সুমিতা চট্টোপাধ্যায়-সহ কয়েকজন শিক্ষক।
অনলাইন ক্লাস শুরু হওয়ায় এক দিকে যেমন ছাত্রছাত্রীরা খুশি, তেমনই সন্তুষ্ট অভিভাবকেরাও। তাঁরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ওই কলেজের শিক্ষিকা সুমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “করোনা-ত্রাসের জেরে কলেজ বন্ধ। কবে ফের খুলবে তার ঠিক নেই। এই অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে পড়াশোনা বন্ধ না থাকে, তার জন্য তাদের কথা ভেবেই অনলাইনে পড়াশোনা ব্যবস্থা করা হয়েছে।” কলেজের শিক্ষক অর্ঘ্যদীপ পাল, মাধু শ্রীবাস্তবের কথায়, “বাড়িতে থেকে পড়াশুনার মধ্যে থাকলে সময় ভাল কাটছে। সবসময় করোনা-আতঙ্কও তাড়া করছে না। পড়ুয়ারাও পড়াশোনার মধ্যে থাকছে।”
ওই কলেজের ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা প্রামাণিক, রত্না নাটুয়া, সুস্মিতা সাউ বলেন, “আচমকা কলেজ ছুটি হওয়ায় সিলেবাস শেষ করা নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলাম। শিক্ষাবিজ্ঞানের শিক্ষক সুমিতা চট্টোপাধ্যায় ‘স্কাইপ’ এবং গুগল ক্লাসরুমের মাধ্যমে ক্লাস শুরু করেন। বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকারাও একই এগিয়ে এসে একই পদ্ধতিতে ক্লাস শুরু করেন।” পড়ুয়ারা জানান, রোজ বিভিন্ন বিষয়ে অন্তত তিনটে ক্লাস হচ্ছে।