প্রতীকী ছবি
বিধি মানার প্রবণতা বাড়ছে। তবুও করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। উত্তর ২৪ পরগনার করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠকে কার্যত প্রকাশ পেল এই ‘অসহায়তা’ই। বিধাননগর থেকে বারাসত পর্যন্ত শহুরে এলাকার অবস্থা নিয়ে সোমবার বৈঠকে বসে জেলা প্রশাসন। সেখানে জেলাশাসক-সহ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলেন ব্যারাকপুর, বিধাননগর এবং বারাসতের পুলিশকর্তারা। বনগাঁ এবং বসিরহাট নিয়ে বৈঠক হয়েছিল গত শুক্রবার।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনায় এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৭৯৮ জন। তার মধ্যে অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ১০৬৪ জন। রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এই জেলা। সেখানে মাথাব্যথা বাড়িয়েছে ব্যারাকপুর ও সংলগ্ন এলাকা। বিধাননগর পুর এলাকা নিয়ে নানা পদক্ষেপ করা হলেও সেখানকার পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তা স্বীকার করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খড়দহ পুরসভা। কয়েক দিন ধরে সেখানে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। হাবড়া এবং অশোকনগর-কল্যাণগড় পুর এলাকার পরিস্থিতিও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এই সমস্ত এলাকায় পুরসভার ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক থাকছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (সারি) রোগীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে বলেও অভিযোগ। পুরসভাগুলির একাংশের বক্তব্য, আমপানের ত্রাণ-সহ অন্য কাজও করতে হচ্ছে তাদের। সে কারণে কখনও কখনও সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ ছুঁতে আর এক ধাপ দূরে রয়েছে জেলাটি। আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে কাটাছেঁড়া হলেও মৃত্যুর হার কমানোকেই পাখির চোখ করতে চাইছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের মতে, এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে হাসপাতালের গড়িমসি কমানো। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালকে নির্দেশও দিয়েছে প্রশাসন। জেলা
প্রশাসনের মতে, আক্রান্তদের অনেকেই দেরিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় বাড়ছে মৃত্যুর হার। কো-মর্বিডিটি থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসা শুরুর বিষয়টিও বৈঠকে উঠে আসে। করোনার উপসর্গ নিয়ে অনেকেই সরাসরি বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন। সেই সময়ে তাঁরা বিধি মানতে অবহেলা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা আরও বাড়ছে। শহুরে এলাকায় এই বিষয়টি ঠেকানোও প্রশাসনের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফের কঠোর লকডাউনের পথে হেঁটেছে হাওড়া। প্রয়োজনে উত্তর ২৪ পরগনাও সে পথে চলবে কি না, আলোচনা হয় তা নিয়েও।
জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা
হচ্ছে। সংক্রমণ রোধে সব রকম চেষ্টা করে যাওয়া ছাড়া কিছু করার নেই বলে মত তাঁদের।