প্রতীকী ছবি।
করোনার ভ্যাকসিনের প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা চলছে বিশ্ব জুড়ে। এই মধ্যে সুন্দরবনের এক গ্রামীণ চিকিৎসক করোনার আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করে ফেলেছেন বলে বহু মানুষকে ঠকাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ওই ওষুধ তিনি করোনা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাওয়াচ্ছেন। নিজে কোনও বিধির তোয়াক্কা না করায় তার মাধ্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রশাসন নীরব দর্শক হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাস্ক না পরেই করোনা আক্রান্তদের বাড়ি চলে যাচ্ছেন ওই চিকিৎসক। নেই হাতে গ্লাভসও। পিপিই কিট পরেন না। হাত ধোয়া বা সন্যিটাইজেও তিনি বিশ্বাসী নন। গ্রামের মানুষের আশঙ্কা, এ ভাবে করোনা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি তিনি ঘুরে বেড়ালে গ্রামে এই রোগ ছড়িয়ে পড়বে। যা বিপজ্জনক। প্রশাসন এর বিরুদ্ধে সরব হোক।
সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের কলতলা মোড়ের বাসিন্দা সাহিদআলি মোল্লা নামে ওই ব্যক্তি এলাকায় গ্রামীণ চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। ১২ আগস্ট থেকে তিনি ব্লক এলাকায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করে চলেছেন। মূলত যে সমস্ত করোনা আক্রান্ত রোগীরা বাড়িতে নিভৃতবাসে রয়েছেন তাঁদেরকেই তিনি তাঁর তৈরি ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। এ দিকে নিজে কোনও বিধি মানছেন না বলে গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোলও নেই বলে অভিযোগ। যেখানে দিনের পর দিন করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে সেখানে দাঁড়িয়ে ওই গ্রামীণ চিকিৎসক এ ভাবে অনৈতিক কাজ করে চলেছেন। মানুষকে একপ্রকার ভুল বুঝিয়ে মুনাফা লুটছেন। করোনার প্রতিষেধক হিসেবে তিনি যে ওষুধ মানুষকে দিচ্ছেন তা সরকারি ভাবে অনুমোদিত নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক সমাজসেবী বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসক স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই অনৈতিক ভাবে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করছেন। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই নিজের তৈরি ওষুধকে করোনার ওষুধ বলে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে খাওয়াচ্ছেন। প্রশাসন সব জেনেও চুপ করে রয়েছে। ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।’’
এ দিকে ওই চিকিৎসক ইতিমধ্যেই নিজের তৈরি ওষুধের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ওষুধটি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার জন্য তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছেন। সাহিদআলি বলেন, ‘‘আমি যে ওষুধ আবিষ্কার করেছি, তা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন-নিবেদন করেছি।’’ কোনও পরীক্ষা না করে কী করে তিনি তা রোগীদের উপর প্রয়োগ করছেন , সে প্রশ্নের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি তার কাছ থেকে। বাসন্তী ব্লকের বিডিও সৌগত সাহা বলেন, ‘‘এরকম একটি বিষয়ের কথা শুনেছি। বিষয়টি দেখার জন্য স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশকে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই চিকিৎসককে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে এ সব বন্ধ করার জন্য।’’