প্রতীকী ছবি।
বনগাঁ মহকুমা জুড়ে ক্রমেই বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। শেষ ১৩ দিনে মহকুমায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪০ জন। সংক্রমণের এই হার যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল সভায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মহকুমায় করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫৯ জন। এর মধ্যে অ্যাক্টিভ রোগী ৪০৯ জন। করোনা আক্রান্ত মানুষ মারা গিয়েছেন ১০ জন। বাকিরা সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবারই আক্রান্ত হয়েছেন ২২ জন।করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমাতে প্রশাসন স্বাস্থ্য দফতর, পঞ্চায়েত পুরসভা পদক্ষেপ করেছে। মানুষকে সচেতন করতে চলছে লাগাতার প্রচার কর্মসূচি। তারপরেও সংক্রমণ কমানো যাচ্ছে না। পরিযায়ী শ্রমিকদের হাত ধরে মহকুমায় করোনা সংক্রমণ বেড়েছিল। তারপরে ছিল কলকাতা যোগাযোগ। চিকিৎসা বা কাজের প্রয়োজনে কলকাতা গিয়ে অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। আর এখন স্থানীয় ভাবেই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি পুলিশ অফিসার, চিকিৎসক নার্স, দমকলকর্মী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মীরাও এই মহকুমায় আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, করোনা পরীক্ষার সংখ্যা এখন আগের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। তাই আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। তবে মানুষের সচেতনতার অভাবেও করোনা এখানে দাপট দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, মানুষের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করানো নিয়ে সচেতনতার অভাব ও ভয় এখনও রয়েছে। উপসর্গ চেপে যাচ্ছেন অনেকে। জ্বর, সর্দি-কাশি হলে ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন বা স্থানীয় চিকিৎসককে দেখাচ্ছেন। করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘করোনা পজ়িটিভ হলে যদি প্রতিবেশীরা বয়কট করেন বা চিকিৎসার জন্য কোথাও যেতে হয়, এ সব নিয়ে দ্বিধায় আছেন অনেকেই। সেই ভয়ে করোনা পরীক্ষা করতে চাইছেন না তাঁরা।’’ তা ছাড়া, অনেকে শারীরিক দূরত্বও বজায় রাখছেন না। মাস্কের ব্যবহারও দেখা যাচ্ছে না।
বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলে, ‘‘বনগাঁ ব্লকে করোনায় আক্রান্তদের সংস্পর্শ থেকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।’’ বাগদার বিএমওএইচ প্রণব মল্লিক বলেন, ‘‘উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র বা বাগদা গ্রামীণ হাসপাতালে যাঁরা চিকিৎসক দেখাতে আসছেন, তাঁদের বুঝিয়ে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘ব্লকে আক্রান্তদের বেশির ভাগকেই বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তোলা হচ্ছে। এখানে মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে সাহস পাচ্ছেন।’’