ক্যানিংয়ে অস্থায়ী কোভিড হাসাপাতাল। নিজস্ব চিত্র
ক্যানিং কোভিড হাসপাতালে অব্যবস্থার অভিযোগ তুললেন চিকিৎসাধীন রোগীদের একাংশ। মাস তিনেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ক্যানিং স্টেডিয়ামে ৫১ শয্যার অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল তৈরি হয়। বেশ কিছুদিন ধরেই সেখানে করোনা আক্রান্ত রোগী ও করোনার উপসর্গ আছে এমন রোগীদের রেখে চিকিৎসা চলছে। কিন্তু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ চিকিৎসাধীন রোগীরা।
অভিযোগ, হাসপাতালে স্নানের জল নেই। খাবার জলও ঠিকমতো মিলছে না। এমনকী সময়মতো দেওয়া হচ্ছে না খাবারও। চিকিৎসক, নার্সরা ঠিক মতো চিকিৎসাও করছেন না বলেও অভিযোগ। জানলা দিয়ে ওষুধ ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে রোগীদের।
করোনা আক্রান্ত রোগীদের বার বার গরম জল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বার বার চেয়েও গরম জল মিলছে না বলে অভিযোগ। আক্রান্তরা নিজেরা চাঁদা তুলে হাসপাতালের এক কর্মীর মাধ্যমে ইলেকট্রিক কেটলি কিনলেও তা ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বেহাল দশা শৌচালয়েরও।
ক্যানিং থানা এলাকার বাসিন্দা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, “এখানে চরম অব্যবস্থা চলছে। দুদিন আগে ভর্তি হলেও কোনও চিকিৎসক আমাকে একবারের জন্য দেখতে আসেননি। নার্সরা জানলা দিয়ে ওষুধ ছুড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছেন।” কুলতলির মেরিগঞ্জের বাসিন্দা এক রোগীর কথায়, “বাড়িতেই ভাল ছিলাম। এখানে আমাদের গরু ছাগলের মতো রাখা হয়েছে। সামান্য গরম জলের জন্য সকলের পায়ে ধরেছি। কিন্তু তা-ও দেওয়া হয়নি।” কুলতলি থানার বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক এক ব্যক্তিও কয়েকদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, “আমাদের সঠিক সময়ে খেতে দেওয়া হচ্ছে না। বাথরুম নোংরা, সেখানে জল নেই। রোগীদের থাকার জায়গা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে না। মশার উৎপাত, কিন্তু মশারির ব্যবস্থা নেই।” সমস্যা সম্পর্কে বারবার হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মীদের জানানো হলেও কোনও সমাধান হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে রোগীদের তৈরি একটি ভিডিও-ও প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ভিডিওর মাধ্যমে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। আনন্দবাজার অবশ্য ভিডিওর সত্যতা
যাচাই করেনি।
রোগীদের অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ঠিক নয়। এখানে রোগীদের সমস্ত রকম খেয়াল রাখা হচ্ছে। সঠিক সময়ে খাবার, জল, ওষুধ সব কিছু দেওয়া হচ্ছে। পাম্প খারাপ থাকায় একদিন বাথরুমে জলের সমস্যা হয়েছিল। দ্রুত সেই সমস্যা মেটানো হয়েছে।”