প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মন্দিরবাজারের বিডিওর। বৃহস্পতিবার সকালে এমআর বাঙুর কোভিড হাসপাতালে মারা যান বিডিও সইদ আহমেদ (৫৬)। তাঁর বাড়ি কলকাতার একবালপুরে। করোনা পরিস্থিতিতে মাস তিনেক বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পাননি তিনি।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ ব্লক থেকে বদলি হয়ে সইদ যোগ দেন মন্দিরবাজারে। দক্ষ প্রশাসক হিসেবে পরিচিতি ছিল তাঁর। সব দলের লোকজনকে নিয়ে কাজ করতে পারতেন। ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের সব স্তরের জনপ্রতিনিধি, নেতা, প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে ছিল নিবিড় সম্পর্ক। ‘কাজ পাগল’ মানুষ হিসেবেই তাঁকে চিনতেন এলাকার মানুষ। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় ৬টি কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি করা, চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থা, করোনা পজ়িটিভ রোগীকে হাসপাতালে পাঠানোর দায়িত্ব সামনের সারিতে থেকে সামলাতেন বিডিও।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই মানুষকে সচেতন করতে ওসিকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিটি পঞ্চায়েতে গিয়ে শিবির করেছেন তিনি। থাকতেন ব্লক অফিসের আবাসনে। দিন কয়েক ধরে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। ২১ অক্টোবর সকালে যান নাইয়ারাট গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভ মেলে।
বিএমওএইচ দেব্রব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘সুগার, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছিল। পজ়িটিভ হওয়ার পরেই এমআর বাঙুরে পাঠানো হয় ওঁকে।’’
বিএমওএইচ জানান, অষ্টমীর দিন ফোনে কথা হয়। বিডিও বলেছিলেন, জ্বর কমেছে। তবে কাশি আছে। নবমীর দিন থেকে আর ফোন ধরার মতো অবস্থায় ছিলেন না। দেবব্রতর কথায়, ‘‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। সকালে মৃত্যুর খবর পেলাম।’’
মন্দিরবাজারের বিধায়ক জয়দেব হালদার, বিজেপি নেতা অশোক পুরকাইত, সিপিএমের নেতা সজল চক্রবর্তীরা সকলেই বিডিওর মৃ্ত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। মন্দিরবাজারের ওসি সঞ্জয়কুমার দে বলেন, ‘‘ভাবতেই পারছি না, হঠাৎ করে এমন দুঃসংবাদ পাব। এক সঙ্গে দিনের পর দিন কাজ করতে করতে উনি খুব কাছের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন।’’
মন্দিরবাজারের ব্লক সহ কৃষি আধিকারিক মহম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, কাজ ফেলে রাখার মানুষ ছিলেন না বিডিও। সমস্ত বিষয়ে নজর রাখতেন।
বুধবার রাতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন নোদাখালি থানা আইসি অনিন্দ্য বসু (৪৫)। বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর।