বেপরোয়া: তারই মধ্যে বল পিটাচ্ছে ছেলের দল। নিজস্ব চিত্র
ডান্ডা উঁচিয়ে কাজ হয়নি। সচেতনতা বাড়েনি লাগাতার প্রচারেও। কান ধরে ওঠবসেও ফল মেলেনি। শহরের বাসিন্দা এক মহিলা দিন কয়েক আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরেও লকডাউন উপেক্ষা করে অকারণে কিছু মানুষ বাজারহাটে ও সড়কে ঘোরাঘুরি করছে। শহরের বড় বাজারগুলি আগেই সংলগ্ন মাঠে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাজার এলাকায় সকালে মানুষের ভিড় কমছিল না। অনেক ক্ষেত্রেই শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকছিল না। এর ফলে করোনা সংক্রমণে আশঙ্কা বাড়ছিল।
সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে প্রশাসনের তরফে বনগাঁ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সংলগ্ন বাজারহাট, কিসান মান্ডি থাকা এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে ঘোষণা করা হল। রবিবার বিকেল বিকেল থেকে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। রবিবার বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, "বনগাঁ শহরে দিন কয়েক আগে এক মহিলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই এলাকাটি কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে জনবহুল সড়ক ও সংলগ্ন বাজারহাট, দোকানপাট সব কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে ২১ দিনের জন্য।’’
বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘পুরসভার ১, ২, ৪, ১০, ১৩ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে থাকা সড়কগুলি কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। ওই ওয়ার্ডগুলির বাকি অংশ বাফার জোন। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না। পুরসভায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। শহরবাসী প্রয়োজনে ওই কন্ট্রোল রুমে ফোন করলে আমরা খাদ্য সামগ্রী বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেব। বাজার হাট দোকানপাট সব বন্ধ থাকবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে কন্ট্রোল রুমের নম্বর, ০৩২১৫-২৫৫০২১ এবং ৭৯০৮৩০৭৭৭৫।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে থাকছে যশোর রোড, চাকদা রোড, বাগদা রোড, স্টেশন। ট বাজার, নিউমার্কেট, নেতাজি মার্কেট, রেলবাজার, মতিগঞ্জ হাট— সব বন্ধ থাকছে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, "ওষুধের দোকান, ব্যাঙ্ক, পোস্টঅফিস, নার্সিংহোম শর্তসাপেক্ষে খোলা থাকবে। ওই সব এলাকায় আসা কর্তৃপক্ষকে থার্মাল গান দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপতে হবে। রেজিস্ট্রার রাখতে হবে। কারও তাপমাত্রা বেশি থাকলে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর বাড়িতে চলে যাবেন।’’রবিবার সন্ধ্যায় প্রশাসনিক কর্তারা এই সিদ্ধান্ত নেন। পুরসভা জানায়, সড়কে বাজার এলাকায় জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করতে পুরসভার থেকে বাড়ি বাড়ি কার্ড পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ওই কার্ড দেখিয়ে পরিবারের একজন সদস্য সপ্তাহে দু'দিন বাইরে বেরোতে পারবেন। কন্টেনমেন্ট ও বাফার জ়োন নয়— এমন এলাকায় এই নিয়ম চালু থাকবে। জরুরি প্রয়োজনে অবশ্য ছাড় দেওয়া হবে। এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার বলেন, "কন্টেনমেন্ট জ়োন ও বাফার জ়োনে রোজ সকালে পাড়ায় পাড়ায় আনাজ ও মাছ নিয়ে ব্যবসায়ীরা যাবেন। লোকজন বাড়ি থেকে তা কিনতে পারবেন।’’