ব্যারাকপুর ক্রীড়াঙ্গনে নতুন সেফ হোম ঘুরে দেখছেন স্থানীয় বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী ও পুর প্রশাসক উত্তম দাস। বুধবার। ছবি: মাসুম আখতার
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অনেক জায়গায় সংক্রমণ বাড়ছে। প্রতিদিন অসুস্থ হচ্ছেন বহু মানুষ। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এ বার বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসেছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের পুরসভাগুলি। কোথাও খোলা হচ্ছে সেফ হোম, কোথাও পরিকল্পনা করা হচ্ছে অক্সিজেন প্রকল্প চালু করার। এ বারের কোভিড পরিস্থিতি যে বিশেষ সুবিধার নয়, তা মেনে নিচ্ছেন ওই সব পুরসভাগুলি।
গত মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে একটি সেফ হোম চালু হয়েছে। ব্যারাকপুর ক্রীড়াঙ্গনে খোলা হয়েছে ওই সেফ হোম। প্রথম দিনেই সেখানে তিন জন কোভিড রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। আপাতত সেখানে ২০টি শয্যা রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী ওই সেফ হোমের পরিকাঠামো এবং শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন ব্যারাকপুর পুরসভার প্রশাসক উত্তম দাস। বুধবার ওই সেফ হোম ঘুরে দেখেন ব্যারাকপুরের নতুন বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। কী ভাবে ওই সেফ হোমের পরিকাঠামো আরও উন্নত করা যায়, তা নিয়ে উত্তমবাবুর সঙ্গে আলোচনাও করোন রাজ। পরে বিধায়ক বলেন, ‘‘ব্যারাকপুরের মানুষ তো বটেই, প্রয়োজনে অন্য জায়গার রোগীর চিকিৎসাও এখানে হতে পারে।’’
ব্যারাকপুরে কোভিডের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর পুরসভা এবং পঞ্চায়েত এলাকাগুলি মিলে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। এমনকি, সপ্তাহে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে তিন-চার জনের মৃত্যুর খবরও রয়েছে পুর প্রশাসনের কাছে।
দিন কয়েক আগেই নৈহাটি পুরসভা বঙ্কিমাঞ্জলি স্টেডিয়ামে একটি সেফ হোম চালু করে। গত বছর করোনার সময়ে এই সব সেফ হোমগুলি চালু করা হয়েছিল। তার পরে সংক্রমণের প্রকোপ কমে গেলে পরে ওই সেফ হোমগুলি সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। বুধবার থেকে নৈহাটির শ্মশানে শুধুমাত্র কোভিড রোগীর মৃতদেহ সৎকারের জন্য একটি চুল্লিও চালু করা হয়েছে।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বর্তমানে কোভিডের মোকাবিলায় তৎপরতা বাড়িয়েছে বিভিন্ন পুরসভা। হালিশহর এবং নৈহাটিতে অক্সিজেন প্লাট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি এ দিন জানান, ওই দু’টি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি হলে কোভিড-মোকাবিলায় ওই এলাকার বাসিন্দাদের চিকিৎসার অনেকটা সুবিধা হবে। হালিশহরেও দিনে ৯০-১০০ জন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে খবর।
কাঁচরাপাড়ায় সংক্রমণের হার তুলনামূলক ভাবে কম রয়েছে বলে জানিয়েছে বীজপুর পুরসভা। সেখানকার পুর প্রশাসক সুদামা রাও জানান, প্রতিদিন ৫০ জনের কোভিড পরীক্ষা করানো হলে তাঁদের মধ্যে ২০-২২ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে। এ ছাড়া প্রতিষেধক নেওয়ার লাইনেও ভিড় জমছে। সুদামা জানান, ভিড় এড়াতে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিষেধক দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রতিদিন সকালে সময়মতো দোকান-বাজার বন্ধ করার কাজে পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে কাজ করছেন পুরকর্মীরাও।