বিতর্ক: সেই শিলান্যাস অনুষ্ঠান
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শিলান্যাস হল জলপ্রকল্পের। কিন্তু সরকারি আধিকারিকদের বদলে ফিতে কেটে প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা।
কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসনাবাদের খাঁপুকুরিয়া এলাকায় এসেছিলেন। বাসিন্দাদের পানীয় জলের সমস্যার কথা জানতে পেরে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেন। আশপাশের এলাকাতেও পানীয় জলের সমস্যার কথা সামনে আসে।
সেই প্রয়োজন মেটাতেই বুধবার মিনাখাঁর কুমারজোল পঞ্চায়েতের মালিয়াড়ি এলাকায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ করে জল প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে। ফিতে কেটে প্রকল্পের সূচনা করেন মিনাখাঁ ব্লক তৃণমূল সভাপতি আয়ুব হোসেন গাজি। পাশেই ছিলেন মিনাখাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপেশচন্দ্র পাত্র, স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের লোকজন।
সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন কী ভাবে হল দলের নেতার হাতে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সিপিএম নেতা প্রদ্যোৎ রায় বলেন, ‘‘প্রশাসন আর তৃণমূল এখন সমার্থক শব্দ হয়ে গিয়েছে।’’ বিজেপি নেতা জয়ন্ত মণ্ডলের কথায়, ‘‘এখন তো সরকার চালাচ্ছে তৃণমূলই। তাই প্রশাসনের যে কাজটা করা উচিত, সেই কাজ তৃণমূল নেতারা করছেন। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।’’
আয়ুবের যুক্তি, ‘‘সরকারি কেউ না থাকায় শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আমিই ফিতে কেটেছি।’ প্রশাসনের কর্তারা এ নিয়ে কেউ মন্তব্য করতে চাননি। কেন প্রশাসনের কর্তারা কেউ ছিলেন না, তারও জবাব মেলেনি। এ বিষয়ে তৃণমূলের জেজাতীয় কর্মসমিতির সদস্য জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘প্রশাসনের কাজে দলের কোনও নেতা হস্তক্ষেপ করবে না, এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। মিনাখাঁয় যদি কোনও নেতা শিলান্যাস করে থাকেন, তা হলে বিষয়টি দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রকল্পের কাজ আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ হবে। উপকৃত হবেন কুমারজোল পঞ্চায়েতের মালিয়াড়ি, তেঁতুলবেড়িয়া, পদ্মপুকুর বেদোয়াড়ি-সহ ছ’টি মৌজার প্রায় দশ হাজার মানুষ। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মাটির নীচ দিয়ে সংযুক্ত পাইপ লাইনের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে যাবে পরিস্রুত জল।