প্রতীকী ছবি।
খামার থেকে মুরগি চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কি গড়াল বোমাবাজি, ভাঙচুর, মারধর পর্যন্ত। কয়েকজন জখম হয়েছেন। গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক রঙও লেগেছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছেৃ অশোকনগর এলাকার শ্রীকৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের গিলাপোল এলাকায়। বারাসতের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোলমালে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১২ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গিলাপোল এলাকায় মুরগির খামার রয়েছে ইবাদাদ মণ্ডলের। তিনি মছলন্দপুর এলাকার একটি সংস্থা থেকে মুরগির খাবার ও মুরগির বাচ্চা এনে খামারে চাষ করেন। মুরগি বড় হলে সংস্থাটির মুরগি নিয়ে যাওয়ার কথা। এর জন্য ইবাদাদ সংস্থা থেকে টাকা পান।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজেপি কর্মী ছবিরুল হক মণ্ডল ইবাদাদের খামারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। দুই ব্যক্তিকে খামার থেকে মুরগি চুরি করে পালাতে দেখেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করলে এলাকার কিছু লোকজন তাঁকে মারধর করে। অভিযোগ, মারধরের ঘটনায় জড়িত তৃণমূল।
উল্টো দিকেও লোকজন জড়ো করে ফেলেন ছবিরুলরা। তৃণমূল পরিবার বলে পরিচিত আব্দুল তরফদারের বাড়িতে বিজেপির লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বোমাবাজি হয়। বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। মহিলাদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। আব্দুলের বাড়ির পাশে তাঁর আত্মীয় খলিল মণ্ডলের বাড়িতেও ভাঙচুর চলে।
খলিল বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূল করি বলেই হামলা করা হয়েছে। মুরগি চুরির ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্কই নেই।’’ আক্রান্ত মৌয়ারা বিবি বলেন, ‘‘আমাদের উপরে ছবিরুলদের আগে থেকে আক্রোশ ছিল। বিজেপির লোকজন আমাদের তৃণমূল করতে চাপ দিয়েছিল। আমরা রাজি হইনি।’’
ছবিরুলের বোন রুবিনা বিবির পাল্টা অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকজনই দাদাকে মারল। উল্টে তারাই আমাদের বাড়িতে এসে বোমাবাজি করেছে।’’
গত বছর ২১ জুলাই এই এলাকায় রাস্তার জমি নিয়ে বিবাদের জেরে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল। এখনও চাপা উত্তেজনা রয়ে গিয়েছে।
অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, ‘‘ওই এলাকার বাসিন্দা এক সরকারি কর্মচারী যিনি আগে সিপিএম করতেন, এখন বিজেপি করেন। তিনি আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিজেপি করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। তাঁরই নেতৃত্বে শুক্রবার আমাদের কর্মীদের বাড়িতে হামলা হয়েছে।’’ অন্য দিকে, বিজেপির অশোকনগর বিধানসভার আহ্বায়ক স্বপন দে বলেন, ‘‘আমাদের কর্মী ছবিরুল মুরগি চুরি হচ্ছে দেখে প্রতিবাদ করলে তৃণমূলের লোকজন তাঁকে মারধর করে। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। উল্টে ছবিরুলকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করব।’’