জরাজীর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ছবি: সামসুল হুদা
শ্যাওলা ধরা জীর্ণ দেওয়ালে বট, অশ্বত্থ সহ অসংখ্য আগাছা জন্মেছে। পাঁচিল ঘেরা জায়াগা ঝোপ ঝাড়ে ভরা। সেখানে সাপ, ইঁদুর, ছুঁচোর অবাধ বিচরণ। দোতলা বাড়ির ঘুলঘুলিতে বাসা বেঁধেছে শালিক, চড়ুই, পায়রা, ঘুঘু। বাইরে থেকে দেখলে ভাঙড়ের সোমনাথ কলোনি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে পোড়ো বাড়ি বলেই মনে হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো নিয়েও অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেশিরভাগ দিন তালাবন্ধ থাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। দায়িত্বে থাকা এএনএম দিনের পর দিন আসেন না। যে ক’জন আশা কর্মী থাকা দরকার, সেটাও নেই। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র পাওয়া যায় না। ফলে দিন দিন চিকিৎসা ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়ছে।
মাঝেরহাটি, ছেলেগোয়ালিয়া, কাটজালা ও সোমনাথ কলোনি এই চারটি গ্রাম নিয়ে সংহিতা আবাসনের পাশে কয়েক বছর আগে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নির্মাণ করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় শানপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েত। এলাকার মানুষের সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি করা হলেও সেদিকে নজর নেই স্বাস্থ্যকর্মীদের। মাঝেরহাটির বাসিন্দা মরিয়ম বিবি বলেন, “ওখান থেকে ঠিকমতো ওষুধও পাওয়া যায় না। যে ওষুধ চাইব, সেটারই নাকি সরবরাহ নেই।” আর এক বাসিন্দা আলমগির মোল্লা বলেন, “ওষুধটা দেবে কে? বেশিরভাগ দিন তালাবন্ধ থাকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। ওষুধ চাইতে গেলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ওখানকার স্বাস্থ্য কর্মীরা।”
ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা এএনএম লিপিকা সাহার বিরুদ্ধে নিয়মিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে না আসা এবং গ্রামের মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠছে। অধস্তন কর্মীদেরও নানাভাবে হয়রানি করেন বলে অভিযোগ। শানপুকুর পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য তুলসী দাস কিছুদিন আগে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর নামে পঞ্চায়েতে লিখিত অভিযোগও করেন। তুলসী বলেন, “লিপিকা সাহা নামে ওই এএনএম ঠিকমতো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন না। মানুষকে ঠিকমতো পরিষেবা দেন না। আমরা বারবার বলার পরেও তিনি বিষয়টি কোনও গুরুত্ব দেন না। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এই নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছি।” অভিযোগ অস্বীকার করে লিপিকা সাহা বলেন, “সম্প্রতি আমার মেয়ের বাচ্চা হয়েছে। আমি কিছুদিন ধরে ছুটিতে আছি।” ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হিরণ্ময় বসু বলেন, “কেন ওই এএনএম ঠিকমতো স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসছেন না তা খতিয়ে দেখা হবে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”