Relief

Cyclone Yaas: ত্রাণে বাঁশ-খুঁটি চাইছেন ঘোড়ামারার বাসিন্দারা

ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতে মন্দিরতলা, চুনপুঁড়ি, খাসিমারা, বাগপাড়া, হাটখোলা এলাকা মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষের বসবাস।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ঘোড়ামারা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২১ ০৬:৫৩
Share:

ঠাঁই: ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর সারানোর চেষ্টা করছেন ঘোড়ামারার এক গ্রামবাসী। নিজস্ব চিত্র।

বাঁশ-খুঁটি, পেরেক, দড়ি কেনার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই। ফলে ভেঙে পড়া ঘর সারিয়ে মাথা গোঁজার ব্যবস্থাটুকু করতেই হিমসিম খাচ্ছেন সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপের বাসিন্দারা। ক্ষতিগ্রস্তেরা সকলেই ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছেন। কিন্তু টাকা আসেনি এখনও। এই পরিস্থিতিতে ঘর মেরামত করতে চাই নগদ টাকা।

Advertisement

ইয়াসে নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ঘোড়ামারা। বহু মাটির বাড়ি তছনছ হয়ে যায়। প্রায় মাসখানেক ধরে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়ে ছিলেন গৃহহীনেরা। এখন ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু সম্পূ্র্ণ ভেঙে পড়া ঘর-বাড়ি তুলে দাঁড় করানোর মতো অর্থ নেই অনেকেরই।

ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতে মন্দিরতলা, চুনপুঁড়ি, খাসিমারা, বাগপাড়া, হাটখোলা এলাকা মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষের বসবাস। জীবিকা মূলত ধান, পান ও মাছ চাষ। এমনিতেই নদী ক্রমশ এগিয়ে এসে দ্বীপের কৃষিজমি গিলে খাচ্ছে। ইয়াসে নোনা জল ঢুকে বাকি জমিগুলিতেও চাষ বন্ধ। সারা দ্বীপে কয়েকশো পানের বরজও নোনা জলে নষ্ট হয়েছে। নোনা জলে ক্ষতি হয়েছে মাছ চাষেরও। ফলে আয় বন্ধ প্রায় সব মানুষের।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, দ্বীপের সমস্ত মাটির বাড়ি ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে রাখা ধান, চাল, বাসনপত্র, জামা-কাপড় সবই ভেসে গিয়েছে জলে। কয়েকশো পরিবার উঁচু জায়গায় পলিথিনের তাঁবু খাটিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। প্রশাসন থেকে দুপুরের খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়। কিছুদিন আগে সেই খাবার দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দুর্যোগের পরেই বহু সংস্থা ত্রাণ দিয়েছে। এখন মজুত রাখা সেই ত্রাণের চাল, ডালে কোনওরকমে চলছে। এখন মাথা গোঁজার একটা জায়গা তৈরি করাই মূল লক্ষ্য ঘরহারা মানুষগুলোর। কিন্তু আয় না থাকায় ঘর তৈরির সরঞ্জাম কেনার মতো অর্থ নেই। তাই অনেকেই চাইছেন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি চাল, ডালের পরিবর্তে ঘর সারানোর সরঞ্জাম নিয়ে পাশে দাঁড়াক।

এলাকার বাসিন্দা শেখ নুরউদ্দিন বলেন, “জলোচ্ছ্বাসের সময়ে পরিবারের সকলে সাঁতার কেটে ট্যাঙ্কপাড়ার কাছে উঁচু জায়গায় উঠে আসি। জল নামলে এলাকায় গিয়ে দেখি ঘরের আর কোনও অস্তিত্বই নেই। দিঘির পাড়ে ছোট তাঁবুতে এত দিন ছিলাম। এ বার তো বাড়িতে ফিরতে হবে। কিন্তু বাড়ি সারানোর সরঞ্জাম কেনার টাকা নেই। বহু সংস্থা খাবার দিতে আসছে। তারা যদি বাড়ি তৈরির সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করে ভাল হয়।” শেখ সৌরভ, সঞ্জীব দাসরা বলেন, ‘‘সরকারি ক্ষতিপূরণ হয় তো পেয়ে যাব। কিন্তু এই মুহূর্তে বাড়িঘর সারাতে নগদ টাকা দরকার। না হলে অন্তত সরঞ্জামটুকু দেওয়া হোক।’’

ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জীব সাগর বলেন, “এখনও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ত্রাণ দিয়ে যাচ্ছে। ফলে খাবারের তেমন অভাব নেই। তা ছাড়া, সরকারি ভাবে আমরা চাল, ডাল, আলু বিলি করার জন্য মজুত রেখেছি। তাই সংস্থাগুলিকে বলা হচ্ছে ঘর সারানোর জন্য বাঁশ, দড়ি ও পেরেক দিতে। ইতিমধ্যে এক সংস্থার তরফে ২০টি পরিবারের হাতে ৮টি গোটা বাঁশ, ১ কিলো পেরেক ও ৫ কিলো নারকেল দড়ি তুলে দেওয়া হয়েছে। আরও সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement