ব্যাগ হাতে হেঁটেই যাচ্ছেন পর্যটক। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের সভা হবে। নেতারা আসবেন। তাই পিছিয়ে দেওয়া হল কলেজের পরীক্ষা। প্রায় এক কিলোমিটার পথে সকাল থেকে দুপর পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হল ভ্যান, টোটো। লটবহর ঘাড়ে রোদের মধ্যে ওই পথ হেঁটে পেরোতে বাধ্য হলেন পর্যটকেরা।
নামখানা কলেজের পাশের মাঠে শনিবার তৃণমূলের সাগর এবং নামখানা ব্লকের কর্মিসভায় আসার কথা ছিল দলের নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীর। তাঁরা অবশ্য আসেননি। তবে এসেছিলেন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা।
ভিআইপিরা আসতে পারেন, এই কথা মাথায় রেখে এ দিন সকাল থেকেই নামখানা থানার তরফে নামখানা ঘাট থেকে নির্মীয়মাণ সেতু পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তায় ভ্যান রিকশা এবং টোটো পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। বন্ধ ছিল নামখানা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের টেস্ট পরীক্ষাও। কলেজের পড়ুয়ারাও গিয়েছিল সম্মেলনে। অধ্যক্ষ দয়ালচাঁদ সর্দার বলেন, ‘‘পরিচালন সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
দলের অনুষ্ঠানের জন্য এ ভাবে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া কী যুক্তিযুক্ত?
নামখানা ব্লক তৃণমূল সভাপতি পরমেশ্বর মণ্ডলের যুক্তি, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নয়। আর তা ছাড়া, কলেজের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনও অসুবিধার কথা বলা হয়নি।’’
এ তো গেল কলেজের কথা। কিন্তু পুলিশের অতি সক্রিয়তার ফলে গাড়ি বন্ধ হওয়ায় বকখালির পর্যটকেরা যে সমস্যায় পড়লেন, তার কী হবে?
এই সমস্যার কথা অবশ্য মানছেন পরমেশ্বরবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারী ব্যাগ নিয়ে অতটা পথ আসতে-যেতে সমস্যা তো হবেই। শুধু মন্ত্রীরা আসার সময়টুকু যানবাহন বন্ধ রাখলেই তো হত।’’
দলের তরফে তবে কী কোনও নির্দেশ যায়নি পুলিশের কাছে?
মানছেন না তৃণমূল নেতারা। সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার তথাগত বসুর দাবি, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
গড়িয়া থেকে নামখানায় বিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন সৌরভ। বললেন, ‘‘ধুলো-ময়লা ভরা পথ। ভারী ব্যাগ ঠেলে নিয়ে কী ভাবে এতটা যাওয়া যায়?’’ ব্রিজের কাজ চলছে বলে রাস্তা সারানো হবে পরে। তাই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। কলকাতা থেকে এসেছিলেন বৃদ্ধ বিমল রায়। ভ্যান, টোটো চলবে না শুনে চাপে পড়ে যান। ব্যাগ কাঁধে তুলে তাঁকে ঘাট থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যেতে হল। টোটোওয়ালাদের জিজ্ঞাসা করে জানা গেল, এ দিন থানা থেকেই ঘাটে ঢুকতে বারণ
করা হয়েছিল।