আরামবাগের বিডিও অফিসে ক্লাস চলছে। নিজস্ব চিত্র
দু’বছর আগে শুরুর সময়ে ক্লাসে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ৫। এখন ৭০। পর পর সাফল্য আসতে থাকায় গরিব মেধাবীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে আরামবাগের ‘বিডিও অফিসের কোচিং সেন্টার’। যেখানে সরকারি চাকরির পরীক্ষার জন্য নিখরচায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
মহকুমায় বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে কর্মরত সিভিল সার্ভিস অফিসারদের পরিচালনায় ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে এর আগে তিন জন আবগারি দফতরের কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন। এ বার আইসিডিএস সুপারভাইজ়ার পদে পরীক্ষার জন্য সাত জন প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। তার মধ্যে পাঁচ জনই পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ-র পরে ওই পদে মনোনীত হয়েছেন। এক সপ্তাহ আগে ফল প্রকাশিত হয়। সাফল্য মিলেছে টেটেও। ২৭ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৮ জন।
আরামবাগের বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ব্লক অফিস চত্বরেই এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সূচনা হয় ২০২১ সালের অক্টোবরে। বিডিও বলেন, “আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে কোচিং শুরু করেছি, তা সফল। খুবই আনন্দিত আমরা।” বিডিও ছাড়াও প্রশিক্ষণ দেন মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অমর্ত্য দেবনাথ, যুগ্ম বিডিও সব্যসাচী দাস, ভূমি দফতরের রেভিনিউ অফিসার সোমশেখর সরকার, সিডিপিও সায়ন্তন জোয়ারদার এবং আরামবাগ থেকে চুঁচুড়ায় বদলি হয়ে যাওয়া অতিরিক্ত জেলা-সাব রেজিস্ট্রার শমিত ঘোষ।
আইসিডিএস সুপারভাইজ়ার পদে মনোনীত হওয়া সুমনা সামন্ত বলেন, “সারা বছর প্রতি সপ্তাহের শনি এবং রবিবার আধিকারিকরা আমাদের ক্লাস করান। যখন যে সব পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি বের হয়, সেগুলোর উপর জোর দিয়ে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেন। নিয়মিত মক টেস্ট হয়। এ ছাড়াও ইন্টারভিউ বোর্ড গঠন করে মক ইন্টারভিউ নেন। এতে আমরা ভীষণ উপকৃত হচ্ছি।” একই কথা বলেছেন আর এক সফল প্রার্থী ঈশিতা দাস। বিডিও জানান, বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার জন্য তাঁর কাছে নানা শংসাপত্র নিতে আসেন পড়ুয়ারা। দেখা যায়, অনেক মেধাবী একাধিকবার পরীক্ষায় বসেও সাফল্য পাননি উপযুক্ত প্রশিক্ষণের অভাবে। নামী কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য তাঁদের নেই। তাঁদের জন্য তিনি মহকুমার সিভিল সার্ভিস অফিসারদের সঙ্গে বসে এই প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা করেন। এখানে এমন ভাবে পড়ানো হচ্ছে যাতে সরকারি বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিতে পারেন পড়ুয়ারা।