মিনাখাঁর ধুতুরদহ গ্রামে উত্তেজনার পর। ছবি: নির্মল বসু।
ভাঙচুর, বোমাবাজি, মারধরের অভিযোগে উত্তপ্ত মিনাখাঁ।
পাশাপাশি দু’টি গ্রাম— ধুতুরদহ, পিপুলদহ। বুধবার দুই পৃথক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তেতে উঠল দুই গ্রামই। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে দল পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে মিনাখাঁয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে হঠাৎ একদল লোক বাইকে করে এসে মিনাখাঁর ধুতুরদহ গ্রামে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। অভিযোগ, শুরু হয় বোমাবাজিও। দুষ্কৃতীরা একটার পর একটা দোকানে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে। ধুতুরদহ গ্রামেই বাড়ি বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি নুর ইসলাম গাজির। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে। এটাই সহ্য করতে পারছিল না তৃণমূল নেতারা। তাই বাইকবাহিনী পাঠিয়ে আমার ৭টি দোকান, বাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেয়। যথেচ্ছ লুটপাটও চালানো হয়।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, মারধরে বাধা দেওয়ায় কয়েকজন মহিলার শ্লীলতাহানি করা হয়। মিনাখাঁ থানার পুলিশ গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকল গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় আগুন নেভায়। বসিরহাট বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত মণ্ডল বলেন,‘‘তৃণমূল বুঝে গিয়েছে যে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আমরাই ক্ষমতায় আসব। তাই তারা এই ভাবে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর লুটপাট ও মহিলাদের শ্লীলতাহানি করে বিজেপি কর্মীদের ভয় দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করতে চাইছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল বলেন,‘‘এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনওভাবেই জড়িত নয়। এটা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।’’
পিপুলদহ গ্রামে এ দিন সুন্নাতুল জামাতের পক্ষ থেকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও বস্ত্র বিতরণের আয়োজন করা হয়েছিল। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। আব্বাস সভামঞ্চে আসার আগে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই সভা ভেস্তে দিতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে গিয়ে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়। আব্বাস অনুগামীদের অভিযোগ, তারা এদিন যখন সভাস্থলে যাচ্ছিলেন তখন পিপুলদহের কাছে তৃণমূলের লোকজন বাধা দেয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দুই তৃণমূল কর্মীকে ধরে ফেলেন আব্বাস অনুগামীরা। ভাঙড় থানার পুলিশ তাদের চণ্ডীপুরের কাছ থেকে উদ্ধার করে। সভা শেষে আব্বাসকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার সভা ভেস্তে দিতে তৃণমূল পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি।’’ যদিও এ দিন হামলা চালানোর অভিযোগ মানতে চায়নি তৃণমূল। পুলিশ জানিয়েছে, মিনাখাঁর দু’টি ঘটনাতেই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।