রাস্তায় বসে পড়ছে শিশুরা। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
রাস্তার পাশে ত্রিপল ঝুলিয়ে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ক্লাস চলে খোলা আকাশের নীচে। এমনই অবস্থা হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েতের পূর্ব মামুদপুর গ্রামের ৭ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় ৬ বছর ধরে এখানে এই কেন্দ্রটি চলছে। প্রথমে স্থানীয় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলত। এ ভাবে দু’বছর চলার পরে এক স্থানীয় বাসিন্দা বিনামূল্যে তাঁর বাড়ির বারান্দায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালানোর অনুমতি দেন। সেখানে দু’বছর ক্লাস চলে। এরপরে আর বাড়ি না মেলায় বর্তমানে নারকেলতলা-মামুদপুর খেয়াঘাট যাওয়ার রাস্তার পাশে একটা ত্রিপল ঝুলিয়েই চালু হয় কেন্দ্র। ত্রিপলের নীচে রান্না করা হয়। সেখানেই রাখা থাকে জ্বালানি। এখানে কোনও শৌচাগার বা জলের ব্যবস্থা নেই। প্রয়োজনে পড়শিদের বাড়িতে যান কর্মীরা। পাশের বাড়ি থেকে জল নিয়ে এসে সহায়িকা রান্না করেন। চাল, ডাল, বাসনপত্র রাখতে, বাসন মাজতেও প্রতিবেশীদের বাড়িই ভরসা।
কেন্দ্রটিতে উপভোক্তা শিশুর সংখ্যা ৪৫। আগে তারা ক্লাস করতে এলেও এখন কোনও ঘর না থাকায় বাচ্চাদের পড়তে পাঠাতে চান না অভিভাবকেরা। বেশিরভাগ শিশু মায়ের সঙ্গে এসে খাবার নিয়ে চলে যায়। কেন্দ্রের কর্মী মঞ্জুশ্রী ঘোষ বলেন, ‘‘রাস্তার উপরে চট পেতে বাচ্চাদের পড়াই। কিন্তু ঘর না থাকায় ৮-১০ জনের বেশি শিশু আসতে চায় না। তা ছাড়া, রাস্তার পাশে বলে বাচ্চাদের নিয়ে খুব ভয়ে থাকি। অসুস্থ হলেও কেন্দ্রে আসতে হয় বাচ্চাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে।’’ তাঁর ক্ষোভ,‘‘বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। শুধু একটা ত্রিপল মিলেছে।’’
অভিভাবক রাজীব পাল, ভাস্কর মান্নারা বলেন, ‘‘রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নীচে ক্লাস হয়। তাই বাচ্চাদের পাঠাতে সাহস হয় না। ক্লাস চালাতে গেলে উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকা জরুরি।’’
হিঙ্গলগঞ্জের সিডিপিও রফিক আলি বৈদ্যের দাবি, এ বিষয়ে খবর নেই তাঁর কাছে। বিডিও হিঙ্গলগঞ্জ, শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী যদিও সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ির জন্য জমি পেতে সমস্যা হচ্ছে। তবুও দেখা হচ্ছে এই ধরনের কেন্দ্রগুলির জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’’